muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

আ’লীগের ৮৫ জন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন

মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ- প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রায় ৮৫ জন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন। এদের মধ্যে প্রথম ধাপে বাগেরহাট জেলায় ৩৪টি ও মাদারীপুরের ১২ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী নেই। এছাড়া দ্বিতীয় ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষদিনে ১৩ ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিএনপিসহ অন্যান্য দল এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হওয়ার পথে।

অভিযোগ উঠেছে, বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা, জমা দেয়ার পর প্রত্যাহারে বাধ্য করে প্রার্থীতা বাতিল করার কারণে অনেক ইউপিতে তাদের প্রার্থী নেই। আবার কোথাও কোথাও সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেও প্রার্থী দিতে পারেনি বিএনপি। তবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ক্ষমতাসীনদের ভয়ভীতি এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্বের কারণে এখন পর্যন্ত দুই ধাপে সরকারি দলের প্রায় ১৫০ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
এই বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রতি আস্থা রাখার কারণে অনেকেই প্রার্থী হতে চাচ্ছেন না। নিজেদের স্বার্থে তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী দেখতে চান।
অন্যদিকে, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, কেন বিএনপি প্রার্থী দিতে পারেনি তা সবাই অবগত আছেন। সারা দেশে ক্ষমতাসীনরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। প্রার্থীদের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র কেড়ে নেয়া হয়েছে। জীবনের ভয়ে অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, জনগণকে ভয় পায় বলেই তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার কৌশল নিয়েছে। এর অংশ হিসেবেই শতাধিক ইউপিতে বিএনপিকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়নি।
যেসব ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন সেগুলো হল- কুতুবপুর, কাঁঠালবাড়ী, দত্তপাড়া, পাঁচ্চর, মাদবরচর, বহেরাতলা উত্তর, বহেরাতলা দক্ষিণ, শিরুয়াইল, নিলখী, কাদিরপুর, বন্দরখোলা, ভান্ডারী কান্দি, বাগেরহাটের চিতলমারী ও মোল্লাহাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন, বাগেরহাট সদর উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন, কচুয়ার চারটি, রামপালের দুটি, মোরেলগঞ্জের তিনটি, ফকিরহাট উপজেলার দুটি ও মংলার একটি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন মল্লিক জানান, আওয়ামী লীগ ৭৪টির সব কটি ইউনিয়নে এবং বিএনপি ৪২টি ইউনিয়নে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিল। মোট ৩৪টি ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় পাহাড়িয়াকান্দি ও ছয়ফুল্লাকান্দি, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার কুশলী, বর্নি ও পাটগাতী এবং ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরখলিফা ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন। পাহাড়িয়াকান্দি ইউনিয়নের বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন আমাকে মামলা-হামলা দিয়ে ফাঁসানোর ভয়ভীতি দেখানোর কারণে আমি মনোনয়নপত্র তুলে নিয়েছি।
এছাড়াও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে ভয়ভীতি দেখিয়ে বরিশালের বানারীপাড়ার উদয়কাঠি, ভোলার চর খলিফা, সাতক্ষীরায় কাদামাটি, বুড়িগোয়ালিনি, কাশিমারি, কুমিল্লার বরকামতাসহ আরও কয়েকটি ইউপিতে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়। ফলে এসব ইউপিতে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো প্রার্থী নেই।
দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ সদরের চারটি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী হওয়ার কথা জানা যায়। তারা সবাই আওয়ামী লীগের মনোনীত। জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধলাহার ও দোগাছিতেও একজন করে প্রার্থী। এছাড়া কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার দীঘিরপাড় ও শেরপুরের নকলার গনপদ্দীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি।

মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/04-03-2016/মইনুল হোসেন

Tags: