দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে জেতাতে ‘প্রয়োজনে এক-৪৭ রাইফেল’ ব্যবহার করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি একটি হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি, এখন জামিনে আছেন।
শুক্রবার বিকালে বাজিতপুর উপজেলার হুমাইপুর ইউনিয়নের টান গোসাইপুর গ্রামের ‘হুমাইপুর ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদরাসা’র মাঠে নির্বাচনি সভায় আব্দুল্লাহ আল মামুন এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ধনু মিয়ার সমর্থনে এ সভার আয়োজন করা হয়।
আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে হুমাইপুরের চৈতনপুর ও নামা গোসাইপুর গ্রাম এলাকার অজ্ঞাত পরিচয়ের দুর্বৃত্তরা রাস্তায় ঝোলানো দলীয় প্রতীক নৌকা পুড়িয়ে দেয়। এর প্রতিবাদে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় দেওয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের ৭ মিনিট ৯ সেকেন্ডের ভিডিওটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন : সাত দিনের সফরে কিশোরগঞ্জ আসছেন রাষ্ট্রপতি
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রকাশ্য জনসভায় মাইকে মামুন বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনো চেয়ারম্যানের ভোট হবে না। নৌকা মার্কার ভোট হবে ওপেন টেবিলে। অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেব। ওইদিন আমরা শুধু আমাদের হুমাইপুরের জনগণের শক্তি নিয়ে আসব না।
আমরা শুধু একে-৪৭ নয়, প্রয়োজনে যা যা দরকার তা নিয়ে আমাদের প্রার্থীকে পাশ করাতে আসব। তিনি বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের, পুলিশ আমাদের, সরকার আমাদের। আর কিছু বলার দরকার আছে?’
আওয়ামী লীগ নেতার এমন হুমকিতে ওই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ না হওয়া শঙ্কায় আছেন তারা।
হুমাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মো. আরিফুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ধনু মিয়া, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন, বাজিতপুর পৌর আওয়ামী লীগ নেতা শওকত আকবর, সাবেক চেয়ারম্যান শফিউল হক, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল হোসাইন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন : পরকীয়ায় বাধা, কিশোরগঞ্জে মায়ের হাতে মেয়ে খুন
বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে পুলিশ তদন্ত করছে। বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। এ ধরনের বক্তব্যের পেছনের ভিত্তি কী, সে সম্পর্কেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ধাপে ১১ নভেম্বর বাজিতপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।