বিশেষ প্রতিবেদক : সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে ক্যাডার-ননক্যাডার বেতন বৈষম্য দূর হচ্ছে। এখন থেকে সবাই নবম গ্রেডে সরকারি চাকরিতে যোগ দেবেন। তবে বিসিএস ক্যাডারে নির্বাচিতরা নবম গ্রেডে যোগদান করলেও তারা পিএসসি মনোনীত কর্মকর্তাদের চেয়ে একটি ইনক্রিমেন্ট বেশি পাবেন। খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে বসে তাদের সমস্যা সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জাতীয় পে-স্কেল ২০১৫ চুড়ান্ত হওয়ার পর বিসিএস ক্যাডার বহির্ভূত সরকারি কর্মকর্তা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজ শিক্ষকসহ নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ ওঠে। এরই এক পর্যায়ে অর্থমন্ত্রীকে প্রধান করে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করা হয়।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ ও জনপ্রশাসন সচিব কামাল আবু নাসের চৌধুরী।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি বিষয় একটু টেকনিক্যাল ধরনের। অষ্টম ও নবম গ্রেড- এ দুটি নিয়ে একটা সমস্যা ছিল। এখানে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, ‘পে-ফিকসেশনের ক্ষেত্রে কেউ অষ্টম গ্রেডে কেউবা নবম গ্রেডে চলে গিয়েছিল। ফলে একটা জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। এখন নবম গ্রেডটাকে এন্ট্রি পদ করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ক্যাডার, নন-ক্যাডার কিংবা বিভিন্ন সংস্থায় যারা সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত সকলেই একই স্কেলে বেতন পাবেন। তবে ক্যাডারভুক্তরা একটি ইনক্রিমেন্ট পাবেন।
সরকারি কলেজ শিক্ষকদের বিষয়ে অর্থসচিব বলেন, ‘এখানে শিক্ষকরা চতুর্থ গ্রেড থেকে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে আগে ৫০ ভাগ সিলেকশন গ্রেড পেতেন, এখন সিলেকশন গ্রেডের পরিবর্তে ৫০ ভাগ প্রমোশন দেওয়া হবে। প্রমোশন পেয়ে তারা উপরের গ্রেডে যাবেন।’
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের কিছু কষ্ট আছে। ইতোমধ্যে তাদের সঙ্গে তিন সচিব (প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অর্থ সচিব ও জনপ্রশাসন সচিব) বৈঠক করেছেন এবং বিষয়টি এখন প্রায় সমাধান হওয়ার পথে। শুধু একটি বিষয়ে তিন সচিব এখনো তাদের সঙ্গে একমত হতে পারেন নি। সেজন্য বেতন বৈষম্য নিরসন কমিটির আগামী বৈঠকে ৪/৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি রাখা হবে। ওই বৈঠকেই বিষয়টি নিষ্পত্তি করা এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’