মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় বাদী হয়ে তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার যে মামলা দায়ের করেছিলেন, ওই মামলায় তাকেই গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। তিনি বলেন, স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের দায়ের করা নগরীর পাঁচলাইশ থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন আদালত শুনানি শেষে মঞ্জুর করেছেন।
ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, একই ঘটনায় মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন বাবুল। এ ঘটনায় দুই মামলা আদালতে চলতে পারে না। আমরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে যাব।
গত ২৭ ডিসেম্বর বাবুল আক্তারের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। যদিও মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় এখন কারাগারে আছেন বাবুল আক্তার।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেছিলেন, এ মামলার তদন্তে স্ত্রী মিতুর খুনের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পেয়েছি। এজন্য নিয়ম অনুযায়ী তাকে তার করা মামলাতেই গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য এক সপ্তাহ আগে চট্টগ্রাম মহানগর আদালতে আবেদন করেছিলাম।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার যে মামলাটি দায়ের করেছিলেন, সেটির তদন্ত শেষ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন না নিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। মিতুর বাবার করা মামলাটিও তদন্ত করছে পিবিআই।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি। এ মামলাতেই এখন তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পিবিআই।
জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেছিলেন বাবুল আক্তার। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। একপর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে স্বামী বাবুল আক্তারেরই নাম। তদন্তে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বছরের ১১ মে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পরদিন ১২ মে দুপুরে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার শ্বশুর অর্থাৎ নিহত মিতুর বাবা। মামলায় আসামি করা হয় আরও সাত জনকে। তারা হলেন- কামরুল ইসলাম মুছা, কালু, ওয়াসিম, শাহজাহান, আনোয়ার, এহতেসামুল হক ভোলা ও সাকি।