muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

এটিএম কার্ড ক্লোনকারী তুর্কি নাগরিক গ্রেপ্তার ঢাকায়

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নাগরিকদের এটিএম কার্ড ক্লোন করে টাকা তুলে নেন বুথ থেকে। এরপর আসেন বাংলাদেশে। এখানে এসেও চেষ্টা চালান ইস্টার্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারলেন না। শতাধিকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। এর মধ্যেই টের পেয়ে যায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

এটিএম কার্ড ক্লোনকারী চক্রের আন্তর্জাতিক সদস্য তুরস্কের এক নাগরিককে ঢাকায় গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশের নাগরিক মো. মফিউল ইসলাম। আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিএমপির সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, বাংলাদেশের ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) রাজধানীর বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে ক্লোনিং কার্ড দিয়ে শতাধিকবার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যাংকটির এন্টি স্কেমিং সফটওয়্যার থাকায় তিনি টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। তার এই অপচেষ্টা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টের পেয়ে পুলিশকে জানায়। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে মাঠে নামে। গত সোমবার সিটিটিসি গুলশান ১ নম্বর থেকে তাকে বাংলাদেশি সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তুরস্কের ওই নাগরিকের নাম হাকান জানবারকান (৫৫)। এটিএম কার্ড ক্লোনিংয়ের দায়ে তিনি ২০১৯ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কারারক্ষীদের হেফাজতে ভারতের আসামের জিবিপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি পালিয়ে যান। এরপর নেপালে যান। নেপাল থেকে আউটপাস নিয়ে তুরস্কে যান। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আসাদুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোনিং এটিএম কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এই তুরস্কের নাগরিক একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। ভারতে ২০১৯ সালে তার বাংলাদেশি সহযোগী শহিদুল ইসলামসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তিনি পালিয়ে এলেও শহিদুল এখনো ভারতের কারাগারে রয়েছেন। শহিদুলের ভাই মফিউল ইসলাম। তারা সবাই মিলে এই এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে থাকেন।’

গত ৩১ ডিসেম্বর হাকান জানবারকান বিজনেস ভিসায় ঢাকা আসেন। তার একাধিক পাসপোর্ট রয়েছে। তিনি একেকবার একেক পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণ করেন।

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকায় আসার পর তুরস্কের এই নাগরিক দুই থেকে চার জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, ইউএসএ, ইন্ডিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়েসহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে স্কেমিংয়ের মাধ্যমে কমপক্ষে একশ’বার টাকা উত্তোলন করেছেন। এসব কার্ড তিনি বিদেশ থেকেই ক্লোন করে নিয়ে আসছেন বলে আমরা ধারণা করছি।’

তিনি জানান, ঢাকায় এসে তিনি পল্টনের ক্যাপিটাল হোটেলে উঠেছিলেন। কার্ড ক্লোনিংয়ের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। ঢাকার অতীতের কোনো ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ।

এই চক্রের সঙ্গে তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত বলেও প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন হাকান জানবারকান।

Tags: