বলিউডের ঝলমলে পর্দায় অত্যাধিক খোলামেলা আর আবেদন নির্ভর ছবির নায়ক হিসাবে সুখ্যাতি আছে ইমরান হাশমির। এজন্য ‘সিরিয়াল কিসার’ উপাধি আছে তার। কিন্তু হঠাৎ গত কয়েক বছর ধরেই এ ধরনের সিনেমায় অভিনয় করেন না।
নিজ মুখে এ রহস্যের কারণ জানালেন অভিনেতা ইমরান হাশমিই! বলেন, ছয় বছরের একমাত্র ছেলেই বদলে দিয়েছে তার জীবন, ক্যারিয়ার। একমাত্র ছেলে অয়নের শরীরে মরণব্যাধী ক্যান্সারের জন্যই বদলে গেছেন ইমরান হাশমি। তার প্রভাব পড়েছে ক্যারিয়ারেও।
ছয় বছরের ছেলে অয়নকে নিয়ে ইমরান হাশমি ও পারভীন শাহানির সংসার। গত দুই বছর ধরে একমাত্র ছেলেটি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। বাবা হিসাবে এ দৃশ্য দেখা খুবই দুর্বিষহ। ইমরান হাশমিও এই অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছেন।
যে হাশমি ফুটপাত, মার্ডার, জিহার, আশিক বানায়া আপনের মত সিনেমা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, সে হাশমিই ছেলের ক্যানসারের পর করতে থাকলেন ঘনচক্কর, অংলি, মিস্টার এক্স এবং হামারি আধুরি কাহিনীর মত অসাধারণ সব সিনেমা। আসলে ছেলের এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়াটাই ইমরান হাশমিকে ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ তৈরি করেছে।
এদিকে ইমরান এখন ব্যস্ত ‘আজহার’ ছবির কাজ নিয়ে। টনি ডি’সুজার পরিচালনায় এতে তাকে দেখা যাবে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন চরিত্রে। এটি মুক্তি পাবে আগামী বছরের ১৩ মে। এতে তার সহশিল্পী প্রাচী দেশাই, নার্গিস ফাখরি, গৌতম গুলাটি, কুনাল রায় কাপুর, হুমা কুরেশী ও মানজোত সিং।
তার চেয়ে তার স্ত্রী যে মানসিকভাবে ছেলের ক্যানসারের কথা শুনে মজবুত ছিলেন তা জানিয়ে ইমরান হাশমি বলেন, আমি মনে করি ইমোশনালি পুরুষের চেয়ে মেয়েরা অনেক এগিয়ে।
আমরা যখন প্রথম অয়নের ক্যান্সারের কথা শুনি, তখন আমি কেঁদে ফেললেও আমার স্ত্রীর চোখ দিয়ে একফোটা পানি পর্যন্ত বের হয়নি। তার সাহসী পদক্ষেপই অয়নকে বাঁচিয়ে তুলার সাহস যুগিয়েছে।
তিনি আরো জানান, ছেলেকে ক্যানসারের হাত থেকে বাঁচিয়ে তুলতে স্ত্রীর ভূমিকায় নাকি ছিল সবচেয়ে বেশী। এর জন্য তার স্ত্রী পারভীনের ব্যাপক প্রশংসাও করেন হাশমি।
ছেলেকে নিয়ে দুই বছর ধরে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। আর এই খারাপ সময়কে বইয়ের পাতায় লিপিবদ্ধ করেছেন ভক্ত অনুরাগীদের জানাতে।
আসছে এপ্রিলে পেঙ্গুইন প্রকাশনা থেকে প্রকাশ পাবে বইটি। বই প্রকাশের আগে ইমরান হাশমি বইয়ের প্রচ্ছদের ফার্স্টলুক প্রকাশ করলেন গতকাল। আর সেখানেই নিজের ক্যারিয়ারে একমাত্র ছেলের প্রভাব নিয়ে কথা বললেন হাশমি।
নিজের ছেলে সম্পর্কে ইমরান হাশমি বলেন, অয়নের নতুন জীবন প্রাপ্তি আমার জীবনকে সত্যিই বদলে দিয়েছে। সে আমাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচতে শিখিয়েছে। ভাবতে শিখিয়েছে জীবনে আঘাত আসবেই। আর তা মোকাবেলা করতে জীবন থেকে পালিয়ে নয় বরং সম্মুখে থেকেই প্রতিহত করতে হবে। বারবার পড়ে গেলেও উঠে দাঁড়াতে হবে। কিন্তু পরাস্ত মনোভাব থাকলে চলবে না।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/22-03-2016/মইনুল হোসেন