সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে শেষবিদায় জানালেন প্রিয় সিলেটবাসী। রোববার দুপুর ১২টার দিকে প্রয়াত মুহিতের মরদেহ বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে করে শহীদ মিনারে আনার পর সর্বস্তরের মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধার মাধ্যমে তাকে বিদায় জানান।
প্রথমে পুলিশের একটি সশস্ত্র দল তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানায়। এরপর সিলেটবাসীর পক্ষে সিলেট বিভাগের সংসদ সদস্যবৃন্দের শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শুরু হয় দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুহিতকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য সকাল থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আসতে শুরু করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে কালো কাপড় দিয়ে বিশেষ মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে কফিনবাহী অ্যাম্বুলেন্স আসার পর বিভিন্ন স্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রথমেই সিলেট মহানগর পুলিশের একটি চৌকস দল ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এরপর প্রয়াতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এরপর সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিতের মরদেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান, মুহিবুর রহমান মানিক এমপি, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি, হাবিবুর রহমান হাবিব এমপি, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও। এছাড়া সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
দুপুর দুইটায় আলিয়া মাদরাসা মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বর্ষীয়ান এ নেতার। এরপর নগরের রায় নগরের পারিবারিক গোরস্থানে মা-বাবার পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।
গত শুক্রবার রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মুহিত। তিনি ক্যান্সারসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ (সদর-নগর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি বিজয়ী হন। এই সময়ে তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে দেশের সবচেয়ে বেশিবার বাজেট প্রণয়নের রেকর্ড গড়েন। ‘আলোকিত সিলেট’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি স্বেচ্ছায় রাজনীতি থেকে অবসর নেন।