প্রথম সেশনটা ভালোভাবেই পার করে দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। যার সুবাদে লিড নিয়ে মোটামুটি নিরাপদ অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে ফিরতেই সেই চেনা রূপে বাংলাদেশ। মাত্র ২০ রানেই শেষ ৫ উইকেট।
ফলে উল্লেখ করার মতো লিড পায়নি স্বাগতিকরা, যা অনায়াসে পার করে দিয়ে ঢাকা টেস্ট জিতে নিয়েছে শ্রীলংকা।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ করেছে সব উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান। অর্থাৎ শ্রীলংকার ১৪১ রানের লিড পেরিয়ে বাংলাদেশ বাড়তি সংগ্রহ মাত্র ২৮ রান।
আর এই ২৮ রান দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩ ওভারেই পার করে দিয়েছেন শ্রীলংকার দুই ওপেনার। ওশাদা ফার্নান্দো টি-টোয়েন্টির মতো খেললেন। ৯ বলে ৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় করলেন ২১ রান। ৭ রান এসেছে অধিনায়ক করুণারত্নের ব্যাট থেকে।
ফলে ১০ উইকেটে ঢাকা টেস্ট জিতে ১-০তে সিরিজ নিজেদের করে নিল শ্রীলংকা।
এর আগে সকালে আগের দিনের সঙ্গে মাত্র ৯ রান যোগ করে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিম। ৩৯ বলে ২৩ রানে শেষ হয় প্রথম ইনিংসে ১৭৫ রান করা মি. ডিপেন্ডেবলের ইনিংস।
৫৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কায় ভুগতে থাকে বাংলাদেশ। এ সময় সাকিব আল হাসানকে নিয়ে দলের হাল ধরেন লিটন দাস।
দুজনের ১০৩ রানের জুটিতে ইনিংস হার এগিয়ে লিড পায় বাংলাদেশ।
ওয়ানডে স্টাইলে ফিফটি হাঁকালেও সংগহ বাড়িয়ে নিতে পারেননি সাকিব। ৬১ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৫২ রান জমা করেন সাকিব।
কিন্তু ৫৮ রানেই থামেন তিনি।
আসিথা ফার্নান্দোর শরীর তাক করা বাউন্সার পুল করার চেষ্টায় দেরি করে ফেলেন সাকিব। বল তার গ্লাভসে ছোবল দিয়ে সহজ ক্যাচ উঠে যায় কিপার নিরোশান ডিকভেলার কাছে।
এর আগে ৫২ রান করে ফিরে যান লিটন। নিজের বলে দুর্দান্ত ক্যাচে লিটন দাসকে বিদায় করে দিলেন আসিথা ফার্নান্দো।
অফ স্টাম্পে পিচ করা লেংথ বল হালকা মুভ করে ঢোকে ভেতরে। লিটন সোজা ব্যাটে ড্রাইভ করার চেষ্টায় ব্যাট হাঁকান। কিন্তু ব্যাটে বলে হয়নি। সোজা চলে যায় বোলারের কাছে। ডান দিক ঝাঁপিয় অসাধারণ ক্ষীপ্রতায় এক হাতে বল জমান ফার্নান্দো।
এর পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত একাদশে সুযোগের সদ্বব্যহার করতে পারেননি।
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ তিনি। ২২ বলে ৯ রান করেন। মেন্ডিসের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন।
অফ স্টাম্পের একটু বাইরে পিচ করা লেংথ বল টার্ন করে ঢোকে ভেতরে। মোসাদ্দেক চেষ্টা করেন নিচু হয়ে পুল শটর মতো কিছু একটা খেলতে, টেস্ট ম্যাচের এ পরিস্থিতিতে যা একদমই অপ্রয়োজনীয়। টাইমিং করতে পারেননি, বল লাগে প্যাডে। লঙ্কানদের আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।
ব্যাট হাতে লড়াই করতে জানা তাইজুল ইসলামও এবার পারলেন না বেশিক্ষণ টিকতে।
আসিথা ফার্নান্দোর ফুল লেংথ বলের লাইন মিস করেন তাইজুল। তার ডিফেন্স ফাঁকি দিয়ে বল লাগে প্যাডে। লঙ্কানদের আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। তাইজুল আউট হলেন তিনি ১০ বলে ১ রান করে।
এরপর উইকেটে গিয়ে প্রথম বলেই হিট করতে মিডল স্টাম্প উড়ে যায় খালেদের। আসিথা ফার্নান্দোর বলে ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে খালেদের ফেরার সঙ্গে সঙ্গে ১৬৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
মাত্র দ্বিতীয় পেসার হিসেবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টেস্টে ১০ উইকেট শিকার করলেন আসিথা ফার্নান্দো।
প্রথম জন ছিলেন ভারতের জহির খান। ২০১০ সালে ১৪৯ রানে ১০ উইকেট নেন তিনি।
আসিথা নিলেন ১৪৪ রানে।