মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের করা মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।তিনি এ সব ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা কেমন, সে প্রশ্ন তুলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ইউরোপ সফরে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।আজ বুধবার ড. মোমেনকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মহসিন রেজা বিষয়টি জানিয়েছেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্নগুলো করবেন, কেন তাঁরা তাদের দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করতে পারে না? এমনকি মার্কিন শিশুদের তাদের হিস্পানিক বা স্পেনদেশীয় পিতামাতাদের সঙ্গে মিলিত হতে দেওয়া হয় না।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে ড. মোমেন বলেন, ‘প্রথমত যুক্তরাষ্ট্র যদি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চায়, তবে কেন রাশিয়ার আরটি টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে? দ্বিতীয়ত, তারা যদি জবাবদিহি চায়, তাহলে কেন প্রতি বছর হাজারো মার্কিন নাগরিক হত্যার জন্য নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো বা পুলিশের জবাবদিহি ও শাস্তি নিশ্চিত করা হয় না? হত্যা হওয়া বেশির ভাগ কালো ও হিস্পানিক নাগরিক। আপনারা কেন মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে এ প্রশ্নগুলো করেন না?’
মার্কিন নির্বাচন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রক্রিয়া যদি স্বচ্ছ হয়, তবে কেন তরুণ মার্কিনিদের দেশটির নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা নেই? তরুণ মার্কিনরা ঠিকমতো ভোটই দেয় না। কেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি নির্বাচনে গড়ে মাত্র ২৫ শতাংশ ভোট পড়ে? যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রক্রিয়া কি অংশগ্রহণমূলক?’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ইস্যুগুলো নিয়ে প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশকে নিয়ে নয়। আমাদের এই দেশকে শাসন বা সাহায্য, উন্নতি করতে যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য নয়।’
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিকাব টকে অংশ নেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। সেখানে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন, মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন তিনি। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে এসব বিষয়ে অত্যন্ত সরব পিটার হাস। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের আকাঙ্খার কথা জোরালোভাবে তুলে ধরছেন তিনি।