মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ- নাট্যকর্মী ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর খুনিদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে বুধবার সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক ঘণ্টা বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।
রবিবার সকালে ঢাকা থেকে রোড মার্চ করে বিকালে কুমিল্লায় পৌঁছে কান্দিরপাড়ে আন্দোলনরতদের সঙ্গে সংহতি সমাবেশ করে গণজাগরণ মঞ্চ। মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার এই ডাক দেন।
ইমরান সরকার বলেন, সোহাগী জাহান তনুর ধর্ষক ও খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে ৩০ মার্চ বুধবার সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেলা ১২টা থেকে এক ঘণ্টা বন্ধ থাকবে। সারাদেশের সব স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে বিচার দাবিতে মানববন্ধন করবেন এই এক ঘণ্টা।
এসময় তিনি হত্যাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন।
ইমরান এইচ সরকার বলেন, সেনানিবাসে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকে। যেখানে সাধারণ মানুষ ঢুকতে পারেনা। সেখানে কীভাবে তনুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হলো ? আমরা চাই না সেনাবাহিনীর হাতে রক্তের দাগ, ধর্ষণের কালিমা থাকুক। তনুর ঘাতকদের সনাক্ত করে বিচারের দায়িত্ব সেনাবাহিনী নিতে পারে। এতে করে সারা বিশ্বে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাবে। আমরা চাই সেনাবাহিনী সিভিল প্রশাসনকে সহায়তা করুক।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিচারের ক্ষেত্রে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রাখতে পারতো, কিন্তু তা রাখা হয়নি। আমরা চাই ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হোক। এটা সরকারের কাছে আমাদের দাবি।
উল্লেখ্য, ২০ মার্চ সন্ধ্যায় টিউশনি করে বাসায় ফেরার পথে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয় সোহাগী জাহান তনুকে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ময়নামতি সেনানিবাসের অভ্যন্তরে পাওয়ার হাউসের পানির ট্যাংক সংলগ্ন স্থানে সোহাগীর মরদেহ পাওয়া যায়। কালভার্টের পাশে ঝোপের ভেতর মাথা থেতলানো সোহাগীর অর্ধনগ্ন মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরের দিন নিহতের বাবা ইয়ার হোসেন কোতয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাতদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের ছয় দিনেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার কিংবা হত্যার রহস্য উদ্ধার করতে পারেনি। তনু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে শুক্রবার মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, কুমিল্লা নগরী ছাড়াও ঘাতকদের বিচারের দাবিতে তনুর গ্রামের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুরের গ্রামবাসী, জেলার চান্দিনা, দেবিদ্বার, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল অব্যাহত রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/27-03-2016/মইনুল হোসেন