কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে ছাত্রী উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বখাটেদের হাতে চার শিক্ষিকা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে রাজধানীর গুলিস্তান ও কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-১৪ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. শাহরিয়ার মাহমুদ খান মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- করিমগঞ্জের জঙ্গলবাড়ি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে সৌরভ মিয়া (১৭), করিমগঞ্জের আব্দুল খালেকের ছেলে আল আমিন সোহেল (২২), জাফরাবাদ ইউনিয়নের মালিবাড়ির শুকনের ছেলে সোহান (১৭) ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের রঘুনন্দনপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে সীমান্ত (১৭)। তাদের মধ্যে সোহেলকে গুলিস্তান এবং বাকিদের করিমগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানায়, করিমগঞ্জ এলাকায় স্কুলগামী ছাত্রীদের নিয়মিত উত্ত্যক্ত করাই ছিল তাদের কাজ। স্থানীয় বখাটেদের নিয়ে গড়ে তোলে সঙ্ঘবদ্ধ চক্র। স্কুলগামী ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করে ভিডিও তৈরি করে নিজেদের ইমো গ্রুপে ছড়িয়ে দিত। আবার জোর করত টিকটক ভিডিও বানাতেও। তাদের কথায় রাজি না হলে নানা রকম ভয়ভীতি দেখাত। কোনো ছাত্রী প্রতিবাদ করলে এসিড নিক্ষেপের হুমকি দেয়া হতো। স্থানীয় কেউ বাধা দিলে বা প্রতিবাদ করলে তাকেও দেয়া হতো হুমকি।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুন করিমগঞ্জের জঙ্গলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন বহিরাগত বখাটেরা বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় তলায় গিয়ে ছাত্রীদের ছবি তোলার চেষ্টা করে। এ সময় কয়েকজন শিক্ষিকা তাদেরকে চলে যেতে বলেন। এ সময় তারা শিক্ষিকাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
বিকালে স্কুল ছুটি শেষে চার শিক্ষিকা অটোরিকশাযোগে বাড়ি ফেরার পথে করিমগঞ্জের তালিয়াপাড়া এলাকায় বখাটেরা অটোরিকশার গতিরোধ করে। পরে তারা শিক্ষিকাদের গায়ে গোবর ও কাদা মিশ্রিত পানি নিক্ষেপ করে চলে যায়।
ঘটনাটি জানাজানি হলে পরদিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বন্ধ রেখে স্কুল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান করিমগঞ্জ থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন।