muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দূর পরবাস

মিশরে প্রবাসীদের  ঈদুল আজহা উদযাপন

নীলনদ আর পিরামিডের দেশ মিশরে উদযাপন হল পবিত্র ঈদুল আজহা। শনিবার রাজধানী কায়রোস্থ প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদ আল-আজহার, আমর ইবনুল আস, সাঈদা জয়নব সহ সারা দেশের মসজিদ গুলোতে ঈদের জামায়াতের সহিত নামাজ আদায় করেছেন দেশটির মুসল্লিরা।

ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ’ ধ্বনি আসতে আসতে থাকে মহল্লার বিভিন্ন মসজিদ থেকে। ভোরের আলো ফুটার আগেই দেখা যায় নারী পুরুষ ও শিশুরা হাতে জায়নামাজ নিয়ে ছুটে চলছে মসজিদের দিকে।

ভোরে সূর্য উঠার ঠিক ২০ মিনিট পর পরেই মসজিদ গুলোতে জামাত শুরু হয়, ঈমাম সাহেব প্রথম রাকাতে ৭ তাকবীর ও দ্বিতীয় রাকাতে ৫ তাকবীর এর সহিত নামাজ আদায় করেন।  ঈদের নামাজ শেষ করে ইমাম সাহেব যথারীতি খুতবা (মুসল্লিদের সামনে প্রদত্ত ধর্মীয় বক্তৃতা) দেন। তবে এই দেশে সিংহভাগ মুসুল্লিই নামাজের সালাম ফিরিয়েই চলে যান নিজ নিজ ঘরে।

 শাফী মাজহাবের অনুসারী মিসরীয় মুসলমানগণ কোন নামাজের পর ঈমাম সাহেবের সাথে হাত তুলে মোনাজাত পড়েন না এবং আমাদের দেশের মত কোলাকুলি করতে দেখা যায় না।

নামাজ শেষ হওয়ার পর পরেই রাস্তায় দেখা যায় ‘গাজ্জার গাজ্জার’ বলে কসাইদের হাক ডাক। হেদাইয়া  (উপটোকন) পারিশ্রমিক এর বিনিময়ে কোরবানীর পশু ওরা জবাই ও কেটে দিয়ে যায়। একটি খাশি জবাই, চামড়া ছারানো ও বড় বড় সাইজে কেটে দিতে থাকে দিতে হয় বাংলাদেশী টাকায় পনর শত টাকা এবং গরু, মহিষ ও উট প্রতি তিন হাজার টাকা।

সকাল বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নেমে আসে ছেলে-বুড়ো সবাই। কোরবানির পশুর সামনে তারা ভিড় করে। শিশুদের জন্য নানা ধরনের খেলনা-বেলুন নিয়ে পসরা সাজায় বিক্রেতারা। মহিলাদের দেখা যায় গয়না ফেরিওয়ালার কাছ থেকে দরদাম করে কেনাকাটা করতে। মিশরে ঈদ-উল-আযহাকে বলা হয় ‘ঈদ-ইল-কিবর্‌’। ঈদের নামাজের পর থেকে উৎসব মুখর হয়ে ওঠে পুরো শহর। এছাড়াও নানান ধরনের আয়োজন করা হয় দেশ জুড়ে। এই দেশের দাতব্য সংস্থাগুলো ও ধনাট্য ব্যক্তিরা কুরবানীর মাংশ ছাড়াও গরীবদের মাঝে প্রচুর পরিমাণে গোশত বিতরণ করে থাকে। এই দিনে সবাই পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সম্বোধন করে বলে, كل سنة وانتم طيبين

“কোল্লু সানা ওয়া আনতুম তাইয়েবীন, যার অর্থ দাঁড়ায়- “ বছরটি আপনার ভাল কাটুক ”।

মিশরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম,  দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় মসজিদে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন।

ঈদের জামাত শেষে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের এর মৃত্যুতে শোক জানাতে কায়রোস্থ বাংলাদেশ দুতাবাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়।

পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশী ও মিসরীয় নাগরিকসহ সবাইকে আনন্দঘন ঈদের শুভেচ্ছা জানান মিশরে বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। তিনি এদেশে বসবাসরত প্রবাসী, তাদের পরিবারের সদস্য স্বজন-প্রিয়জনদেরও শুভেচ্ছা জানান।

Tags: