অর্পিত সম্পত্তির মামলায় মূল মালিকদের ক্ষতিপূরণসহ হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের কয়েকটি মতামত ও নির্দেশনা বাতিল করে রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধান চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সম্প্রতি ৩৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করেন। আজ শনিবার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আপিলকারী ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাভোকেট মনজিল মোরসেদ। বিবাদি ও রিটকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাভোকেট মো. ইমতিয়াজ ফারুক। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাভোকেট সুব্রত চৌধুরী।
এর আগে অর্পিত সম্পত্তি আইন চালেঞ্জ করে সরকারের সাবেক কর্মকর্তা আবদুল হাই জনস্বার্থে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। হাইকোর্ট রুলটি নিষ্পত্তি করে রায় ঘোষণা করেন। রায়টিতে হাইকোর্ট মতামত ও নির্দেশনা দেন যে, ভবিষ্যতে আর কোনও সম্পত্তি অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত করা যাবে না, প্রতিটি জেলায় সম্পত্তি অর্পিত নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করা, প্রতি জেলায় আপিল ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা, ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্দিষ্ট সময় মামলা নিষ্পত্তি করা, মামলা ফাইল এর ক্ষেত্রে তামাদি আইন প্রয়োগ করা, ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনাল এর রায় নির্দিষ্ট সময় বাস্তবায়ন করা, সরকারের দখলে থাকা নির্দাবি অর্পিত সম্পত্তি মানুষের উন্নয়নে ব্যবহার করা, প্রয়োজনীয় আইন করে যে সম্পত্তিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সেগুলোর নামকরণে মূল মালিককে অন্তর্ভুক্ত করা এবং যে সকল অর্পিত সম্পত্তি অপ্রত্যাপনযোগ্য সেইক্ষেত্রে মালিককে আইন করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় আপিল দায়ের করে এবং শুনানি শেষে গত ২ জুন আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দকী, বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, বিচারপতি বোরহানউদ্দিন এবং বিচারপতি এম. এনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।
রায় প্রসঙ্গে মনজিল মোরসেদ বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। কারণ যদি মূল মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হতো তাহলে হাজার হাজার একর অর্পিত সম্পত্তি যা সরকারের দখলে আছে সেসব সম্পত্তির মূল্য বাবদ হাজার হাজার কোটি টাকা অর্থ পরিশোধ করতে হতো।