ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল ও গ্রেপ্তারে সরকারের পূর্বানুমতি নেয়ার বিধান বাতিলের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রোববার সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী রোববার এ মামলার শুনানির দিন ধার্য করেন।
এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) ধারা বাতিল ও সংবিধানের ২৬, ২৭, ৩১ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হয়।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। যা চেম্বার আদালত হয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন। পাশাপাশি ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদনের শুনানি মুলতবি করেন। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ রোববার বিষয়টি শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে।
ক্রমানুসারে বিষয়টি উঠলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ঢাকার বাইরে রয়েছেন। এ জন্য তিনি এক দিন সময় চেয়েছেন। পরে আদালত বলেন, ‘নট টুডে’। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালের নভেম্বরে সরকারি চাকরি আইন প্রণয়ন করা হয়। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে একই বছরের ১ অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর হয়।
আইনটির ৪১ (১) ধারার ভাষ্য, কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে করা ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাকে গ্রেপ্তার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হবে।
ধারাটি সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের পরিপন্থী উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে তিন আইনজীবী ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট করেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকারের পূর্বানুমতি নেয়ার বিধান কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।