ঢাকার মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডে অবস্থিত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠান ‘মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১’ এ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। ২৬ অক্টোবর ২০২২ তারিখ বুধবার সকাল ৯ঃ০০ টা হতে এ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন ট্রাস্টের সচিব (উপসচিব) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তরফদার মোঃ আক্তার জামীল। ভ্রাম্যমান আদালতকে সহায়তা প্রদান করেন ডিএমপির ৬ প্লাটুন পুরুষ ও ২ প্লাটুন মহিলা পুলিশ। এছাড়া মোহাম্মদপুর থানার পুলিশের সদস্যবৃন্দ এবং মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মকর্তা-কমর্চারীগণ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ৯ তলার ৯/এইচ ফ্ল্যাটের জহুরা বেগম, ১০ তলার ১০/জে ফ্ল্যাটের মোঃ মান্নান আলী, ১১ তলার ১১/বি ও ১১/এল ফ্ল্যাটের যথাক্রমে রওশন আক্তার ও মোঃ বাহার উদ্দিন রেজা, ১২ তলার ১২/বি ফ্ল্যাটের মাজেদা বেগম এবং ৬ তলার ৬/কে ফ্ল্যাটের গোলাম মোস্তফাকে উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদের আগে অবৈধভাবে দখল করা ফ্ল্যাটের মালামাল সরিয়ে নেয়ার জন্য তাদেরকে সময় দেয়া হয়। মালামাল সরিয়ে নেয়ার পরে সেগুলো সিলগালা করে ট্রাস্টের দখলে আনা হয়।
এছাড়া, কমার্শিয়াল স্পেসে ২ তলায় অবস্থিত প্রাইম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃক ৫টি ভয়েডে (খালি স্থান), রেমেডি কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃক ২টি ভয়েডে (খালি স্থান) এবং রাজধানী ব্লাড ব্যাংক কর্তৃক ১টি ভয়েডে (খালি স্থান) অবৈধভাবে নির্মিত দোকানসমূহ উচ্ছেদ করা হয়।
জানা যায়, ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পরপরই মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের ৮৪টি ফ্ল্যাটের মধ্যে অনেকগুলোতে বরাদ্দ না পাওয়া সত্বেও অনেকে জোর করে উঠে পড়েন। এর মধ্যে কেউ কেউ মাঝের দেয়াল ভেঙে দু’টি ফ্ল্যাট এক করে জবর দখল করে নেন। এছাড়া ঢাকায় জমি বা বাড়ি রয়েছে এমন অনেকেও তথ্য গোপন করে টাওয়ারে বরাদ্দ নেন।
উল্লেখ্য, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের কল্যাণে আবাসিক ও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য বহুতল এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করা হয় ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে। ১৫ তলা এই ভবনে ২টি বেজমেন্ট আছে, সেখানে রয়েছে ৮০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। রয়েছে ৮৪টি আবাসিক ফ্ল্যাট। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলায় ৭৪টি দোকানের জায়গা রাখা হয়েছে। চতুর্থ ও পঞ্চম তলাও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়।
মাঝে কিছু দখলদারকে সরানো গেলেও অনেকেই জোরপূর্বক থেকে যান। দীর্ঘদিন পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলো। সকলের আশা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে যারা প্রকৃত পাওয়ার হকদার তারা যেন বরাদ্দ পান।