হত্যা মামলাসহ ১২টি চাঞ্চল্যকর মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই মামলাগুলোর মধ্যে তিনটি মামলা ঢাকা মহানগরের। বাকিগুলো বিভিন্ন জেলার। সম্প্রতি দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এ মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে রাজধানীর পল্লবীতে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলাটিও রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরদিন ১৬ ফেব্রয়ারি পল্লবী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলাটি ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা চতুর্থ আদালতে বিচার চলছিল। এ মামলাটিকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এ পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
একইভাবে ২০১১ সালে ঢাকা মহানগরের উত্তরা মডেল থানায় দায়েরকৃত উজ্জ্বল হত্যা মামলাও পাঠানো হয়েছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। মামলাটি ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতে বিচার কার্যক্রম চলছিল।
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া এলাকায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে উজ্জ্বল নামের আরেক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেই মামলাটির বিচার চলছিল ময়মনসিংহের দায়রা জজ আদালতে। মামলাটিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এ পাঠিয়েছে।
ধোবাউরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হক জানান, উজ্জ্বল হত্যা মামলায় ১৩ জন আসামি রয়েছে। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তার চাচাও। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কয়েক বছর আগে উজ্জ্বলরা তার চাচাকে আঘাত করলে তার পা ভেঙে যায়। তারই প্রতিশোধ হিসেবে ২০১৩ সালের ৩০ মার্চ তার চাচার ছেলেরা মিলে উজ্জ্বলের উপর লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। গুরুতর অবস্থায় উজ্জ্বলকে হাসাপাতলে নিয়ে গেলে তিনি সেখানে মারা যান। পরে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় চার্জশিট দেয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, নাটোর জেলার সিংড়া থানায় গত বছর ১৯ জানুয়ারি দায়ের করা ১৬ নম্বর মামলাটির বিচার চলছিল নাটোরের দায়রা জজ আদালতে। সেই মামলাটি পাঠানো হয়েছে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে।
রাজশাহী মহানগরের মতিহার থানায় ২০১৩ সালের ২০ জুলাই দায়ের করা একটি মামলা রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুানালে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি রাজশাহীর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচার কার্যক্রম চলছিল।
এছাড়া রাজশাহীর শাহ মখদুম থানায় ২০১২ সালে ৪ জানুয়ারি দায়ের করা ১ নম্বর মামলাটিও পাঠানো হয়েছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। এই মামলাটিও রাজশাহীর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচার চলছিল।
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানায় ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর দায়ের করা হয়েছিল একটি হত্যা মামলা, যার নম্বর ২৮। এ মামলাটির বিচার চলছিল কক্সবাজারের দায়রা জজ আদালতে। সেই মামলটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোর জেলার কোতোয়ালী মডেল থানায় ২০১২ সালের ১১ মার্চ দায়ের করা হয় আরেকটি হত্যা মামলা। এ মামলাটি যশোরের অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালতে বিচার চলছিল। মামলাটি খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়।
গাজীপুরের জয়েদেবপুর থানায় ২০১১ সালের ১ সেপ্টেম্বর আরেকটি হত্যা মামলা ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ পাঠানো হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানায় ২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলাটি বিচার চলছিল মুন্সীগঞ্জের দায়রা জজ আদালতে। এ মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এ পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর কলাবাগান থানায় ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ পঞ্চম আদালতে বিচার চলছিল। এ মামলাটিকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এ পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া শেরপুর জেলার সদর থানায় বিস্ফোরক আইনে ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ দায়ের করা ৩১ নম্বর মামলাটি শেরপুরের দায়রা জজ আদালতে বিচার চলছিল। এ মামলাটিকেও ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ পাঠানো হয়েছে।