বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশকে সবশেষ রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে তারাবোর দিকে যেতে দেখা গেছে। সাদা গেঞ্জি পরা ৩-৪ জন ফারদিনকে লেগুনায় উঠিয়ে নিয়ে তারাবোর দিকে যায়। লেগুনার চালক ও সহকারীকে খোঁজা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘চনপাড়া বস্তিতে ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছে না ডিবি। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে পরবর্তী সময়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
এর আগে র্যাব জানায়, ফারদিনকে জিম্মি করে অথবা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চনপাড়া বস্তিতে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়। শীর্ষ মাদক কারবারি রায়হান গ্যাং ফারদিন হত্যার নেপথ্যে কাজ করেছে। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রায়হানসহ বেশ কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যে কোনো সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফারদিন হত্যা নিয়ে এসব কথা জানায় র্যাব।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর র্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘পরশ হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পারলেও হত্যায় কারা জড়িত, তা আমরা কিছুটা শনাক্ত করেছি। তার হত্যায় রায়হান গ্যাংয়ের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে আমরা সন্দেহ করছি। রায়হানের নামে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তিনি চনপাড়ায় মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনও বলার মতো কোনো অবস্থানে আমরা নেই। পরশের বেড়ে উঠা চনপাড়া থেকে বেশি দূরে নয়। এটা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ড চনপাড়াতেই হয়েছে, এটা নিশ্চিত। যাদের নাম আসছে–সবাইকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’
গত ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয় বুয়েট শিক্ষার্থী পরশের মরদেহ। তৈরি হয় ব্যাপক চাঞ্চল্য। ঘটনার পর হত্যা মামলা করেন পরশের বাবা। মামলা তদন্ত করতে গিয়ে একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী অনেকটাই বেকায়দায় পড়ে। কীভাবে মরদেহ এলো শীতলক্ষ্যায়, কারা খুন করল পরশকে–এসব রহস্যের জট খুলতে গিয়ে ক্লুলেস এ মামলার তদন্তভার আসে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে।
একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আসে পুলিশের কাছে, যেখানে পরশকে তার বান্ধবী বুশরার সঙ্গে রিকশায় দেখা যায় রামপুরা এলাকায়। পরশের বাবার করা হত্যা মামলায় বুশরা এক নম্বর আসামি। গ্রেফতারও করা হয় তাকে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। যদিও হত্যায় বুশরা জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত পায়নি পুলিশ। মামলায় কারাগারে আছেন বুশরা।