কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে কেন্দ্র করে পদ্মা ও মেঘনা নামের দুই বিভাগ এ বছর হচ্ছে না। আজ রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উঠলে সেটি স্থগিত করা হয়।
সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে নিকার পদ্মা ও মেঘনা নামের নতুন দুই বিভাগ করার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে বলে নিশ্চিত করেছে বৈঠক সূত্র। এ বিষয়ে আজ বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র।
জানা গেছে, বিভাগ দুটি করলে কমপক্ষে এক হাজার কোটি টাকা করে অন্তত দুই হাজার কোটি টাকা প্রাথমিকভাবে দরকার। সেই সঙ্গে প্রতিটি বিভাগে অন্তত ২৮টি করে নতুন দপ্তর খুলতে হবে। সেসব দপ্তরে জনবলসহ আনুষঙ্গিক অনেক বিষয় জড়িত। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকার উন্নয়ন কাজের অর্থ বরাদ্দে গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই নতুন বিভাগের কাজ আগামী অর্থবছর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
বৈঠকের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, এ দুটি বিভাগ করা নিয়ে অন্যান্য জেলা, নামকরণসহ অনেক বিষয় বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। তাই সব মিলিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকার আপাতত এ সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসেছে।
ঢাকা বিভাগ থেকে ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী আলাদা করে গঠন হওয়ার কথা ছিল পদ্মা বিভাগ। আর চট্টগ্রাম বিভাগকে ছেঁটে ফেলে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর নিয়ে গঠন হওয়ার কথা ছিল মেঘনা বিভাগ। দেশে এখন পর্যন্ত যে আটটি বিভাগ রয়েছে তার প্রতিটিই অঞ্চলের প্রধান জেলার নামে করা হয়েছে। এবারই প্রথম জেলার নাম ছাড়া প্রশাসনিক ইউনিটের নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
বিভাগ গঠনের আলোচনার সময় সেটি কুমিল্লা নাকি নোয়াখালীর নামে হবে, সে বিষয়টি নিয়ে গত কয়েক বছর চলছিল বিতর্ক। নোয়াখালীর নামে বিভাগ চেয়ে নানা কর্মসূচিও পালন করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা, তবে কুমিল্লাবাসী চাইছিলেন তাদের জেলার নামেই হোক বিভাগ। পরে সরকার কোনো জেলার নাম বাদ দিয়ে মেঘনা নদীর নামকে বেছে নিয়েছে।
যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় নাম আসা খোন্দকার মোশতাকের জেলা কুমিল্লার নামে তিনি বিভাগ করতে চান না। একই ভাবে ফরিদপুর অঞ্চলেও কোনো জেলার নামকে প্রাধান্য না দিয়ে সেই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় নদীটির নামকেই বেছে নেন প্রধানমন্ত্রী।