muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

চোরাচালান-মানব পাচার রোধে বিজিবি-বিএসএফ যৌথ টহল

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) রিজিয়ন কমান্ডারস (চট্টগ্রাম, সরাইল ও কক্সবাজার রিজিয়ন এবং ময়মনসিংহ সেক্টর) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) ফ্রন্টিয়ার ইন্সপেক্টর জেনারেলসের (ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং মিজোরাম ও কাচার ফ্রন্টিয়ার) মধ্যে ৩ দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন শুক্রবার সমাপ্ত হয়েছে।

গত ৭ ডিসেম্বর ভারতের আগরতলায় সীমান্ত সম্মেলন শুরু হয়। বিজিবির দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়ন, চট্টগ্রামের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তানভীর গনি চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

অপরদিকে, বিএসএফ ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ারের ইন্সপেক্টর জেনারেল শ্রী সুমিত শরণের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনের শুরুতে বিএসএফ প্রতিনিধিদলের প্রধান ইন্সপেক্টর জেনারেল শ্রী সুমিত শরণ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও সার্বিক সহযোগিতার জন্য বিজিবি ও বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি কার্যকর ‘সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) বাস্তবায়নে উভয় বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিজিবি প্রতিনিধিদলের প্রধান তানভীর গনি চৌধুরী সীমান্তে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তি-১৯৭৫ অনুসরণ এবং কার্যকরভাবে সিবিএমপি বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি উভয় বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতায় অত্যন্ত সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সম্মেলনে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো-

সীমান্তে নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা/আহত/মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় যৌথটহল পরিচালনা, জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি আরও বেগবান করা এবং বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণসহ অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

বিভিন্ন ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ বিশেষ করে ইয়াবা ও ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক ও নেশাজাতীয় ট্যাবলেট ইত্যাদি পাচার রোধ, স্বর্ণ, অস্ত্র ও গরু চোরাচালান রোধে উভয় বাহিনীর মধ্যে তাৎক্ষণিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য আদান-প্রদান এবং এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত ও আটকদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সীমান্তে চোরাচালান ও মানব পাচার রোধে বিজিবি ও বিএসএফ যৌথ টহল বৃদ্ধি করা।

আন্তর্জাতিক সীমানা লংঘন করে অবৈধভাবে সীমানা অতিক্রম/অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে বিরত রাখতে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা।

আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে অবৈধ ও অননুমোদিত নির্মাণকাজ না করা এবং বন্ধ থাকা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজগুলো পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে দ্রুত সম্পন্ন করা।

উভয় পক্ষই বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখতে এবং পারস্পারিক আস্থা বৃদ্ধির জন্য প্রীতি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সেমিনার/সিম্পোজিয়াম/ওয়ার্কশপ আয়োজন করার ব্যাপারে পারস্পরিক সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।

সম্মেলনটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় উভয় প্রতিনিধিদলের প্রধান অত্যন্ত সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং সীমান্তে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

Tags: