কিশোরগঞ্জে পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা শহরের গাইটাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
দুই পক্ষকে থামাতে পুলিশ ১১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় জেলা মটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কায়সার আহমেদ কাইয়ুম ও সাবেক দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বাসস্ট্যান্ড থেকে সকল রোডে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন।
কিশোরগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ ও ১১ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের দুটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ১১ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পরপরই শ্রমিক ইউনিয়নের একটি পক্ষ কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাওয়া সকল রোডে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ মটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কায়সার আহমেদ কাইয়ুম বলেন, বাস স্টেশনে মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে। যাতায়াত পরিবহনের চেয়ারম্যান মানিক সরকারের কাছে মালিকেরা মালিকেরা ১০-১৫ লাখ টাকা পাবে। এই টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত গাড়ি চালানো বন্ধ থাকবে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। আমাদের ওপর হামলা করেছে তাদের গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
যাতায়াত পরিবহনের পরিচালক ও কিশোরগঞ্জ মটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, যাতায়াত পরিবহনের ৫০ টি বাস ১৮ দিন যাবত বন্ধ রয়েছে। শফিকুল ইসলাম মানিক ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। তারপর বলে, চাঁদা না দিলে একটি গাড়িও চলবে না। মঙ্গলবার বিকেলে আমরা বাস চালু করতে গেলে আমাদের কাউন্টার মানিক পিছনে নিতে বলে। আমরা কাউন্টার পিছনে কেনো নেব জিজ্ঞেস করলে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের একজন শ্রমিক নেতা কাঞ্চন মারাত্মক আহত হন। তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি নিজেও আহত হয়েছি।
কিশোরগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন মানিক জানান, শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতিকে কারা মারপিট করেছে তা আমি জানি না। এ কারণে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতার সব বাস বন্ধ করে দিয়েছে।
যাতায়াত পরিবহনের চেয়ারম্যান মানিক সরকার বলেন, শ্রমিক নামধারী সন্ত্রাসী শফিকুল ইসলাম মানিক আমাকে বলে ‘যাতায়াত পরিবহন বাসটার্মিনাল থেকে চালাতে হলে আমাকে এককালীন ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে এবং মাসে ১ লাখ টাকা করে দিয়ে যেতে হবে।’ চাঁদা না দেওয়ার কারণে গত ১ ডিসেম্বর আমার যাতায়াত পরিবহনের ৫০টি বাস বন্ধ করে দেয়। সোমবার বিকেলে বাস চালু করতে চাইলে শফিকুল ইসলাম মানিক ও কিশোরগঞ্জ মটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কায়সার আহমেদ কাইয়ুমের নেতৃত্বে হামলা চালায়।