মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ- কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বোর্ডের প্রধান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডা. কামদা প্রসাদ সাহা এবং প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. শারমিন সুলতানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি।
রোববার বিকালে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন হত্যা মামলা অধিকতর তদন্ত সহায়তা ও তদারকি করতে সিআইডির ডিআইজি (ক্রাইম-ইস্ট) মো. মাহবুব মোহসিনের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তরা।
এর আগে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা রোববার দুপুরে কুমিল্লা সেনানিবাসে গিয়ে তনুর লাশ পাওয়ার স্থান ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর বিকালে সিআইডির এ উচ্চ পর্যয়ের দলটি কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে বৈঠক করেন।
এ সময় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কামদা প্রসাদ সাহাসহ (কেপি সাহা)তনুর মরদেহের একাধিক ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বোর্ডের সদস্য চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডির উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত ২০ মার্চ তনু হত্যাকাণ্ডের পর ৩০ মার্চ ডিবি থেকে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। ওই মামলা তদন্তে সিআইডির সিনিয়র পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দকে প্রধান করে তদন্ত সহায়ক কমিটি গঠন করার পর থেকে এ দলটি দফায় দফায় কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় মরদেহ পাওয়ার স্থান ও তনুর পরিবারের সদস্য, সেনা সদস্যসহ বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বিকালে সিআইডির উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বোর্ডের প্রধান ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডা. কামদা প্রসাদ সাহা এবং প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. শারমিন সুলতানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
তনুর প্রথম ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত না থাকায় এবং মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত না হওয়ায় ওই ময়নাতদন্ত প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তার বাবা ইয়ার হোসেন। এ ছাড়া আদালতে মামলার দ্বিতীয় তদন্ত সংস্থা ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ মার্চ তনুর লাশ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করা হয়।
গত ৪ এপ্রিল তনুর প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন মিডিয়ায় প্রকাশ করেন কুমেকের বিভাগীয় প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা।
তনুর শরীরে দুটি আঘাত থাকার পরও কেন তার মৃত্যুর কারণ সুম্পষ্ট নয়? সাংবাদিকদের এমনই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন,’যে দুটি আঘাত রয়েছে, তা মৃত্যুর জন্য যথেষ্ঠ নয়, তাকে ধর্ষণের আলামতও পাওয়া যায়নি।’
গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা ময়নামতি সেনানিবাসের বাসার অদূরে তনুর মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ ও ডিবির পর এখন মামলাটি তদন্ত করছেন সিআইডি কুমিল্লার পরিদর্শক গাজী মো. ইব্রাহিম।
সিআইডি অফিসে বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান সাংবাদিক জানান, ‘মামলার তদন্তে অগ্রগতি হচ্ছে, ঢাকা থেকে আসা উচ্চ পর্যায়ের টিম মামলার তদন্তের বিষয়ে নানা দিকর্নেশনা দিয়েছেন, ঢাকা থেকে আসা ডিআইজি স্যার সেনানিবাসের জিওসি,স্টেশন কমান্ডার, তনুর বাবা-মাসহ আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন, অধিক গুরুত্ব দিয়ে এ মামলার রহস্য উদঘাটনে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ জন্য সবাইকে আরও অপেক্ষা করতে হবে।’
শিগগিরই তনু হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তনু হত্যা মামলার তদন্ত সহায়ক কমিটির প্রধান সিআইডির ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দ বলেন, হত্যার ক্লু উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। বিভিন্ন তথ্য যাছাই করা হচ্ছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/10-04-2016/মইনুল হোসেন