কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে দেলোয়ার হোসেন ইমন (৪০) নামে এক যুবলীগ নেতা কর্তৃক এক মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীকে ফিল্মি স্টাইলে শ্লীলতাহানি করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
এ ঘটনায় বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে আহত অজুফা আক্তার যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। এর আগে মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধান আসামি ছাড়াও ওই মামলায় বড়খারচর গ্রামের মো: জজ মিয়ার ছেলে মো: মনির হোসেন (২০), মো: আলম মিয়ার ছেলে দিহান (২৫), মৃত আব্দুর রাশিদের মেয়ে ফারজানা আক্তার (৩৭), ভরাডুল গ্রামের সাফি মিয়ার মেয়ে লিপি আক্তার (৪০) ও জসিম উদ্দিনের ছেলে জয়দের (১৮) নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৩৫ জনের নামে কুলিয়ারচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভরাডুল গ্রামের পরকীয়া প্রেমিকা লিপি আক্তারকে খুশি করতে তার কথায় গত ২৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার ভরাডুল গ্রামে উছমানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন আহম্মেদ (৫০) ও উছমানপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা অজুফা আক্তারের (৩৮) বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রাসহ দলবল নিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে পাশের বড়খারচর গ্রামের মো: আবু বাক্কারের ছেলে উপজেলা যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ইমন (৪০)।
হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী অজুফা আক্তারসহ তিনজন আহত হয়। হামলার সময় যুবলীগ নেতা ইমন মিয়া ফিল্মি স্টাইলে অজুফা আক্তারকে নির্মমভাবে মারধরসহ শ্লীলতাহানি করে। এ সময় ৯৯৯-এ কল করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে হামলাকারীদের হাত থেকে প্রাণে রক্ষা পান ওই নেত্রীসহ তার দু`সন্তান। পরে কুলিয়ারচর থানা পুলিশের সহায়তায় এলাকাবাসী আহত অবস্থায় অজুফা আক্তারকে উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। আহত বিজয় (১৫) ও রাজুকে (১৩) কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে শ্লীলতাহানির ভিডিও ভাইরাল করায় সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে হামলাকারীরা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দা নাছিমা আক্তার চায়না ও উছমানপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাজমা সুলতানা বুধবার বিকেলে চিকিৎসাধীন আহত অজুফা আক্তারকে দেখতে হাসপাতালে যান। এ সময় তারা হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এ ঘটনায় উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কুলিয়ারচর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: নিজাম ক্বারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে বলেন, এটা একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এক গ্রামের মানুষ অন্য গ্রামে গিয়ে এভাবে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও নারীসহ শিশুদের মারধর করতে পারে না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এতো ক্ষমতা ইমনের হলো কীভাবে? বিষয়টি আমি দেখছি।