মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ- মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা বিচারের জন্য অন্য আদালতে বদলির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জাকির হোসেন টিপু রোববার মামলাটি বদলির আদেশ দিয়ে পরবর্তী বিচারের জন্য নথিটি সিএমএম বরাবর প্রেরণ করেন। রোববার মামলাটিতে খালেদা জিয়ার উপস্থিতির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু নির্ধারিত দিনের আগে গত ৫ এপ্রিল খালেদা জিয়া মামলাটিতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান।
গত ২৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী এই মামলা দায়ের করেন। ওই দিন আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে খালেদা জিয়াকে ৩ মার্চের মধ্যে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই দিনও তিনি আদালতে হাজির হতে না পারায় তার পক্ষে সময়ের আবেদন করলে আদালত ফের ১০ এপ্রিল তাকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
মামলায় দ-বিধির ১২৪ (ক) ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের পাশাপাশি ১২৩ (ক) ধারায় বাংলাদেশ সৃষ্টির নিন্দা ও তার সার্বভৌমত্ব বিলোপে সমর্থন করার এবং ৫০৫ ধারায় জনগণের অনিষ্ট সাধন সহায়ক বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগও করা হয়েছে। ওই দিন আদালত ৩টি ধারায়ই অভিযোগ আমলে নিয়ে সমন জারি করেন।
মামলার ৩টি ধারার মধ্যে ১২৪ (ক) ধারায় সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড ও সর্বনিম্ন ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও যে কোন পরিমাণ অর্থদণ্ড অথবা শুধু যে কোন পরিমাণ অর্থদণ্ড, দণ্ডবিধির ১২৩ (ক) ধারায় সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ড এবং দণ্ডবিধির ৫০৫ ধারায় সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। মামলাটিতে ৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা চান নি, তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ‘আজকে বলা হয়, এতো (৩০ লাখ) শহীদ হয়েছে, এটা নিয়েও তো অনেক বিতর্ক আছে।’ তার বক্তব্য পরদিন বিভিন্ন জাতীয় পত্র প্রত্রিকায় প্রকাশিত হয়। যেহেতু এই বক্তব্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটাক্ষ করে, স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে যা দন্ডবিধি ১২৩(ক) ধারায় অপরাধ।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/10-04-2016/মইনুল হোসেন