মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ- ‘দ্য ভয়েস অব ইন্ডিয়ান ক্রিকেট’ বা ‘ভারতীয় ক্রিকেটের কণ্ঠস্বর’- এই নামেই পরিচিতি পেয়েছেন জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে। তাঁর নিরপেক্ষ, সুতীক্ষ্ণ বিশ্লেষণের কারণে ক্রিকেট খেলাটা আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে টেলিভিশনের দর্শকদের কাছে।
কিন্তু এবারের আইপিএলে হঠাৎ করেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে হার্শাকে। কী কারণে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়ে চলছে অনেক জল্পনা-কল্পনা। তবে অনেকেরই অনুমান, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার বিশ্বকাপের ম্যাচে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের প্রশংসা করার কারণেই বিপাকে পড়তে হয়েছে এই ভারতীয় ধারাভাষ্যকারকে।
২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম আসর থেকেই হার্শা ছিলেন আইপিএলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এবারের আসরের নিলাম অনুষ্ঠানেও উপস্থাপক হিসেবে দেখা গেছে ৫৪ বছর বয়সী এই ধারাভাষ্যকারকে। আইপিএলের ম্যাচগুলোতে ধারাভাষ্যকারদের রোস্টারেও ছিল তাঁর নাম। সেই অনুযায়ী বিমানের টিকেটও কাটা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে বহিষ্কার করা হয়েছে হার্শাকে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ধারাভাষ্যকারদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আমরা প্রত্যেকের মতামত বিবেচনা করে থাকি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধারাভাষ্যকারদের সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেছি আমরা। খেলোয়াড়দের মতামতও বিবেচনা করেছি।’
সত্যিই সামাজিক গণমাধ্যমের মতামত পর্যবেক্ষণ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে হার্শার কপাল পোড়ার জন্য একদিক দিয়ে দায়ী থাকবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও। ভারতের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে হার্শার প্রশংসা কুড়িয়েই হয়তো বিপত্তিটা বাধিয়েছেন মাশরাফি-সাকিবরা। সেই ম্যাচ শেষে বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন টুইটারে কড়া সমালোচনা করেছিলেন হার্শার। অন্য দলের খেলোয়াড়দের প্রশংসা করার চেয়ে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়েই বেশি কথা বলা উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন ‘বিগ বি’। সুনির্দিষ্ট কারো নাম না বললেও ইঙ্গিতটা যে হার্শার দিকেই, তা বুঝতে কারোরই কষ্ট হয়নি। অমিতাভের সেই টুইটের সঙ্গে একমত পোষণ করেছিলেন ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিও। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের প্রশংসা করার জন্য আইপিএল থেকে বাদ দিয়ে হার্শাকে হয়তো একটা শিক্ষাই দিতে চেয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
তবে এ নিয়ে অনেক সমালোচনার মুখেও পড়তে হচ্ছে মহা ক্ষমতাধর বিসিসিআইকে। অনেকেই হার্শাকে সরিয়ে দেওয়ার তীব্র সমালোচনা করছেন সামাজিক গণমাধ্যমে। ‘ব্রিং ব্যাক হার্শা’ নামে একটি হ্যাশট্যাগও বেশ চালু হয়েছে টুইটারে।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/11-04-2016/মইনুল হোসেন