muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

শ্রীবরদী পৌরসভার মেয়র আবু সাঈদকে বরখাস্ত করার সুপারিশ ইসির

মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ- ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন, ত্রাস সৃষ্টি, ইউএনও ও ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলা, প্রাণনাশের হুমকি—এসব অভিযোগে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে শেরপুরের শ্রীবরদী পৌরসভার মেয়র আবু সাঈদকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এর আগে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে বাধা দেওয়া, জনমনে ভীতি সঞ্চার এবং নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপরাধে ইসি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলিমকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছিল। স্থানীয় সরকার বিভাগ ওই সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়।

ইসি সচিবালয়ের উপসচিব মো. সামসূল আলম গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শ্রীবরদী পৌরসভার মেয়রের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠনো হয়েছে। আমরা আশা করছি বুধবার এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।’ তিনি বলেন, ওই মেয়র সম্পর্কে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে তাতে তাঁকে বরখাস্ত করার পাশাপশি তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।

গত ৩১ মার্চ দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের দিন শ্রীবরদীর ইউএনও হাবিবা শারমিনের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে তিনি আহত হন। ওই দিন রাত সোয়া ৮টার দিকে কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খামারপাড়া এলাকা থেকে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে আনার পথে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোট গণনার পর কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খামারপাড়া কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারকে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা অবরুদ্ধ করে রাখে—এমন খবর পেয়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে যান ইউএনও হাবিবা শারমিন। ওই সময় অবরোধকারীরা তাঁর কাছে কেন্দ্রের ফল ঘোষণার দাবি জানায়। কিন্তু পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় তিনি রাজি হননি। তখন অবরোধকারীরা তাঁর গাড়িতে হামলা চালালে তিনি আহত হন। পরে অতিরিক্ত ফোর্স গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা শেষে রাতে তাঁকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে শ্রীবরদী উপজেলার ছয়টি ইউপিতে ভোটগ্রহণের সময় সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নির্বাচনী এলাকায় মহড়া দেন এবং বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হন শ্রীবরদী পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির সদস্য আবু সাঈদ। আচরণবিধি লঙ্ঘনের এই বিষয়টি জানতে পেরে ইউএনও হাবিবা শারমিন তাঁকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি উল্টো উত্তেজিত হয়ে ইউএনওর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। এমনকি ইউএনওকে হত্যার হুমকি দেন। এরপর ওই দিন রাতে নির্বাচনী সামগ্রীসহ নিজ অফিসে ফেরার পথে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নে হামলার শিকার হন ইউএনও এবং তাঁর গাড়িচালক। এই হামলার জন্য মেয়রই দায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ ঘটনায় শেরপুরের জেলা প্রশাসক ডা. এ এম পারভেজ রহিম ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে মেয়র আবু সাঈদের আচরণ অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী এবং স্থানীয় প্রশাসনের জন্য হুমকিস্বরূপ।’ জরুরি ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে। চিঠির অনুলিপি নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে ইউএনও হাবিবা শারমিন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মেয়র আবু সাঈদের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বলে আমি আশা করছি।’

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য পৌর মেয়র আবু সাঈদের মোবাইল ফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/13-04-2016/মইনুল হোসেন

Tags: