সোহানুর রহমান সোহান, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : ভৈরবে সবচেয়ে বড় ফুলের বাজারটি বঙ্গবন্ধু সরণী রোড এলাকায় আরমান উল্লাহ মার্কেটে । সেখানে দোকানে দোকানে হরেক রকম গোলাপসহ সাজিয়ে রাখা হয়েছে গ্লাডিওলাস, গাঁদা, জারবেরা, বেলী, চন্দ্রমল্লিকা, চেরী ও জিপসী, থাইলেন্ডডি, চায়না, তূর্কি গোলাপ,ইন্ডিয়ান লিলি, গেডিয়াস, জিএফসি, গেলেনডোনাসহ রঙ বেরঙের নানা দেশি-বিদেশি ফুল। ফুলের তোড়া তৈরিতে শেষ মূহুর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা। এর বাইরে কর্মচারীদের কেউ ফুলের পসরা সাজাচ্ছেন, কেউ কথা বলছেন ক্রেতার সঙ্গে। বসন্তের প্রথম দিন ও ভালোবাসা দিবস একই দিনে চিরায়ত সুন্দরের প্রতীক ভালোবাসার বিশেষ দিবস উৎসবের রঙ ছড়িয়েছে আরও একবার। এই বসন্ত উদযাপন ও ভালোবসা দিবসের অপরিহার্য উপাদান ফুল। বিশেষ এ দিনটিকে ঘিরে বদলে যায় ফুলের বাজারও। চাহিদার সঙ্গে ফুলের দাম যেন জহির রায়হানের কবিতা মেনে ‘আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হবো’, হয়ে যায়। বসন্তের আগমনী বার্তার সঙ্গে আমেজ বইছে ভৈরবে ফুলের দোকানে দোকানে। পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে ফুল বিক্রিতে বজার খুব চড়া।
এবার দোকানগুলোতে তোলা হয়েছে অতিরিক্ত ফুল। ভোর থেকে ক্রেতার ভিড়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় বিক্রেতাদের হাঁকডাক। বেলা বেড়ে সরব হয় ফুলের বাজার। ভৈরবে সবচেয়ে বড় ফুলের বাজারটি বঙ্গবন্ধু সরণী রোড এলাকায়।সেখানে দোকানে দোকানে হরেক রকম গোলাপসহ সাজিয়ে রাখা হয়েছে গ্লাডিওলাস, গাঁদা, জারবেরা, বেলী, চন্দ্রমল্লিকা, চেরী ও জিপসীসহ রঙ বেরঙের নানা দেশি-বিদেশি ফুল। ফুলের তোড়া তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা। এর বাইরে কর্মচারীদের কেউ ফুলের পসরা সাজাচ্ছেন, কেউ কথা বলছেন ক্রেতার সঙ্গে। এসব ফুলের মধ্যে দেশী লাল গোলাপ বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০ টাকায়। অন্যান্য ফুলের মধ্যে বিভিন্ন রঙের চাইনিজ গোলাপ প্রতিটি ৪০-৬০ টাকা, রজনীগন্ধা প্রতি স্টিক ২০ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ২০ টাকা ও গাঁদা ফুলে লহরপ্রতি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে মেয়েদের খোঁপার গাজরা আর মাথার ক্রাউন বিক্রি হচ্ছে প্রতিপিস ১০০-১৫০ টাকা করে।
তবে এবার ১৪ ফেব্রুয়ারি ও ১৩ ই ফেব্রুয়ারী পহেলা ফাল্গুন দুটি দিবস এবার আলাদা আলাদা হওয়ায় ফুলের চাহিদার সঙ্গে তুলনামূলক দামও বেড়েছে বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা। গাঁদা ফুল অপেক্ষা এবার গোলাপের চাহিদা অপেক্ষাকৃত বেশি বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। রবিবার সন্ধ্যা থেকে বেচা-বিক্রি বেড়েছে; যা আজ পুরো দিনজুড়েই চলবে। তাদের প্রত্যাশা, এবারে কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে। বঙ্গবন্ধু রোডের আরমান উল্লাহ মার্কেটে আনকমন পুষ্প কেন্দ্র এন্ড নার্সারী ফুল দোকানি আরাফ হাবিব বলেন, ‘দুটি বসন্তে করোনার কারণে আমাদের বেচা-বিক্রি হয়নি। গত বছর তো ১৪ ই ফেব্রুয়ারিতে দোকাই বন্ধ রাখতে হয়েছে। তবে এবার আশা করি ফুল ভালো বিক্রি করতে পারব। মো. শাহা-আলম দোকানি বলেন, বছরের বড় বড় দিনগুলোতেই তো আমরা সাধারণত বেশি ফুল বিক্রি করতে পারি। গত দুই বছর বন্ধ থাকায় আমাদের যা ক্ষতি হয়েছে, এবার তো পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা থাকবে। তবে করোনার আগে যেমন ক্রেতা ছিল চোখে পড়ার মত ।
এ দিকে করোনায় ফুল চাষিদের লোকসানের কারণে চাষ বন্ধ রাখায় চাহিদার তুলনায় ফুলের উৎপাদন কম বলে জানান ফুল দোকানি মো. দুলাল মিয়া । তাই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ফুল। তিনি বলেন, ‘করোনার সময় ফুল বিক্রি হয়নি বললেই চলে। এ সময় চাষিদের চাষ করা ফুলগুলো গাছ থেকে নিয়ে ফেলে দিতে হয়েছে। তাই তাদের অনেকে ঋণে পড়ে ফুল চাষ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে চাহিদার চেয়ে ফুলের যোগান কমে গেছে। তাই সামান্য দামও বেড়ে গেছে ফুলের। আগে আমরা যে ফুল ৫ টাকায় কিনতাম এখন সেটা ৮-৯ টাকা। তাই বিক্রির সময়ও দাম একটু বেশি নিতে হচ্ছে। তবে ফুলের বাজার স্বাভাবিক আছে বলে দাবি করেছেন।
ইমদাদুল হক ইমন বলেন,এখন ফুলের বাজার স্বাভাবিক আছে। বেচা-বিক্রিও ঠিকঠাক। আর চাহিদা বাড়লে দাম তো সামান্য বাড়েই। তিনি আরও বলেন, ‘করোনার আগে প্রতি প্রহেল ফাল্গুনে আমাদের অনেক টাকার ফুল বিক্রি হয়। এই বছরে বেশি ফুল বিক্রি হবে বলে আশা করা যায়।