বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে বসতে চায় মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট-আইএস। ঘোষণা করা হয়েছে আইএসের বাংলাদেশ প্রধানের নামও। আইএস বলছে, বাংলাদেশের মধ্যে শক্ত ঘাঁটি তৈরি করতে পারলে, সেখান থেকে তারা ভারত এবং মিয়ানমারে বড় ধরনের হামলা পরিচালনা করতে সমর্থ হবে।
আইএস-এর মুখপাত্র সাময়িকী ‘দাবিক’-এ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে আইএসের বাংলাদেশ প্রধান শেখ আবু-ইব্রাহিম আল-হানিফ একথা জানান।এই প্রথমবারের মতো আইএস তার ‘বাংলার যোদ্ধা’ দলের প্রধানের পরিচয় প্রকাশ করলো। আইএস বাংলাদেশে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো শাখা ঘোষণা করেনি।
তবে এই সংগঠনের অনুসারীরা ধর্মনিরপেক্ষ লেখক এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে।
এই হামলাগুলোর ব্যাপারে গর্বিত বক্তব্য দিয়ে শেখ আবু-ইব্রাহিম আল-হানিফ বলেন, ‘নাস্তিক এবং নবীকে নিয়ে উপহাসকারী এবং মুরতাদদের গলা কাটার জন্য আমাদের যোদ্ধারা এখন চাকু ধার দিচ্ছে।’ তবে আইএসের প্রতিদ্বন্দ্বী দল আল-কায়েদার উপমহাদেশ শাখা অফিসও এই ধরনের হামলায় দায়িত্ব স্বীকার করেছে।
দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানের সুবিধের কথা ব্যাখ্যা করে আল-হানিফ ভবিষ্যতে ‘হিন্দু ভারত’ এবং ‘বৌদ্ধ বার্মা’র বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনার কথা বলেন। ‘মুসলিম হত্যার প্রতিশোধ’ এবং ওই অঞ্চলে আইএসের খিলাফত প্রতিষ্ঠাই এই জিহাদের লক্ষ্য বলে তিনি জানান।
আইএসের এই আঞ্চলিক প্রধান বলেন, ভারতের পূর্বদিকে বাংলাদেশ এবং পশ্চিম দিকে পাকিস্তান। (আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে আইএসের শাখা পুরো অঞ্চলটিকে খোরাসান প্রদেশ নামে ডাকে।)
তিনি বলেন, এর মানে হলো বাংলাকে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে সেখান থেকে এবং পাকিস্তান থেকে একই সঙ্গে ভারতের মধ্যে গেরিলা যুদ্ধ চালানো সম্ভব হবে। মিয়ানমারের প্রশ্নে তিনি জানান, বাংলাদেশে অবস্থান জোরদার করার পরই তারা সে দেশে হামলা শুরু করবেন।
ভারত ও মিয়ানমারে জিহাদ শুরু করতে কেন দেরি হচ্ছে তা ব্যাখ্যা করে শেখ আবু-ইব্রাহিম আল-হানিফ বলেন, কাছের শত্রু- বাংলাদেশ সরকার এবং ভুয়া মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কারণেই দূরের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করা যাচ্ছে না।
দাবিক’র ১৪তম সংস্করণটি ১৩ এপ্রিল প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা।