মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ- বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে পান্তা-ইলিশ খেয়ে ২৮ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ওই অন্ষ্ঠুানে অংশ নিয়ে পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ, চিংড়ি ভত্তা, ডাল ভত্তা খান শতাধিক লোকজন ।
এদের মধ্যে ২৮ জন বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কচুয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া পান্তা ইলিশ খাওয়া উপজেলা প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে লোকলজ্জার ভয়ে বাড়িতে বসেই চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
গুরুতর অসুস্থ হয়ে কচুয়া হাসপাতালে ভর্তিদের মধ্যে রয়েছেন কচুয়া আবু নাসের মহিলা কলেজের প্রভাষক বনী আমিন ঝুকু, কচুয়া মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কমল চন্দ্র বৈদ, কচুয়া সিএস মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিরিনা আক্তার, উপজেলা নির্বাহী অফিসারে গাড়ি চালক জাকির হোসেন, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মহিদুল ইসলাম, স্থানীয় অধিবাসীসহ কচুয়ার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৮/১০ জন ছাত্রছাত্রী।
কচুয়া হাসপাতালে ভর্তি দৈনিক পূর্বাঞ্চলের কচুয়া উপজেলা প্রতিনিধি দিহিদার জাহিদুল ইসলাম বুলু শুক্রবার সকালে জানান, উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে খাবারের তালিকায় পান্তা-ইলিশ, ডাল ভত্তা, আলু ভত্তা ও চিংড়ি মাছ ভত্তার মেনু ছিল। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে তার প্রচন্ড পেটে ব্যথা শুরু হয়। এ অবস্থায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হন। বেশ কয়েকবার তার বমি হয়েছে বলে তিনি জানান। কচুয়া উপজেলার হোটেল আগমন থেকে বর্ষবরণের ওই খাবার সরবরাহ করা হয়েছিল এমন অভিযোগ করেন জাহিদুল। ভোরের পাতার বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি খোন্দকার নিয়াজ ইকবাল শুক্রবার দুপুরে জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকে তিনি ও তার স্ত্রী বিউটি বেগমের প্রায় একই সময়ে পেটে ব্যাথা শুরু হয়। পরে কয়েকবার বর্মি হয়েছে তাদের।
তিনি জানান ওই অনুষ্ঠানে তার দুই সন্তান কচুয়া মোবাইদুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ইরিনা ইকবাল তিন্নি ও তিন বছরের ছেলে নিবিড় ইকবাল তাদের সাথে যোগ দিলেও তারা কোনো খাবার না খাওয়ায় ফুড পয়জনিংয়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
কচুয়া উপজেলা হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম বলেন, রাত ১২টা থেকে শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত খাদ্যবিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অসুস্থদের সকলেই পহেলা বৈশাখে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে পান্ত-ইলিশসহ অন্যান্য খাবার খেয়েছেন বলে জানান।
একটি সূত্র জানায়, ওই অনুষ্ঠানে পান্তা ইলিশ খাওয়া উপজেলা প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবে তারা হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এদিকে এ ঘটনায় কারণ উদঘাটনে জন্য কচুয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: তাপস কুমার দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহাবুবুর রশীদ এই তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
আগামী তিন দিনের মধ্যে ওই কমিটিকে তাদের তদন্ত রির্পোট জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- কচুয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা দেবেন্দ্র নাথ রায় ও মৎস্য কর্মকর্তা কবির হোসেন।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/15-04-2016/মইনুল হোসেন