কেপ টাউনে ইতিহাস গড়ল দক্ষিণ আফ্রিকার নারীরা। শক্তিশালী ইংল্য়ান্ডকে ৬ রানে হারিয়ে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রবল চাপে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ। পুরুষ এবং নারী দুই ক্ষেত্রেই বিশ্বকাপে বারবার ব্যর্থ তারা। ফিটনেস টেস্টে পাশ করতে পারেননি নিয়মিত অধিনায়ক ডেন ড্যান নিকার্ক। তাকে বাদ দিয়েই বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড। নেতৃত্ব দেওয়া হয় সুনে লুসকে। ব্য়াকফুটে থেকেই অনবদ্য় পারফরম্য়ান্স দক্ষিণ আফ্রিকার।
আফ্রিকার দেশটিতে প্রথমবার হচ্ছে মেয়েদের বিশ্বকাপ। আর ঘরের মাঠে প্রথম বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখলেন সুনে লুসরা। ভারত-অস্ট্রেলিয়া প্রথম সেমিফাইনালে একটা রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ দেখেছেন ক্রিকেট প্রেমীরা। সে ম্য়াচের ফয়সালা হয়েছিল শেষ ওভারে। মাত্র ৫ রানে হারে ভারত। দ্বিতীয় সেমিফাইনালও রুদ্ধশ্বাস হল। শেষ অবধি মাত্র ৬ রানের জয় ছিনিয়ে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুযারি) কেপ টাউনে টসে জিতে ব্য়াটিং নেয়ার বিষয়ে দ্বিতীয় বার ভাবেননি দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক সুনে লুস। দুই ওপেনার এবং মারিজান ক্যাপের ব্যাটে ইংল্যান্ডকে ১৬৫ রানের লক্ষ্য দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার নারীরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৮ রান করে ইংল্যান্ড।
এদিন, অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যোগ্য় মর্যাদা দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্য়াটাররা। উল্টো দিকে ক্য়াথরিন ব্রান্ট, ন্য়াট সিবারের মতো অভিজ্ঞ বোলাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনিং জুটির অনবদ্য় শুরু তাদের ভিত শক্ত করে।
ওপেনিং জুটিতে ৯৬ রান যোগ করেন লরা উলফার্ট এবং তাসমিন ব্রিৎজ। উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগে দল পাননি লরা (৫৩)। সেমিফাইনালের মতো হাইভোল্টেজ ম্য়াচে অর্ধশতরানের ইনিংস খেললেন। তাসমিন মাত্র ৫৫ বলে ৬৮ পানে বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। তিন নম্বরে নেমে ১৩ বলে ২৭ রানের অপরাজিত ইনিংস অলরাউন্ডার মারিজানে কাপের।
ইংল্য়ান্ডকে ১৬৫ রানের বড় লক্ষ্য় দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এর জন্য় প্রয়োজন ছিল ভালো শুরুর। ড্য়ানি ওয়্যাট-সোফিয়া ডাঙ্কলি ৫৩ রানের জুটি গড়ে। পার্থক্য় গড়ে দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার মিডিয়াম পেসার নাদিন ডি ক্লার্ক। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে সেট ব্য়াটার ন্য়াট সিবারের উইকেট। কোনও বাউন্ডারি দেননি ক্লার্ক। তার তৈরি করা চাপ থেকে বেরোতে পারেনি ইংল্য়ান্ড।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আয়োবঙ্গা খাকা ৪ উইকেট নেন। অভিজ্ঞ শাবনিম ইসমাইল ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের লক্ষ্য় ছিল ১৩ রান। সেই রানের পুঁজি নিয়েও দক্ষিণ আফ্রিকাকে জেতান শাবনিম।
কেপ টাউনের পুরো মাঠ জুড়ে তখন উৎসবের আবহ। দর্শক ভর্তি গ্যালারিতে নাচ-গান আর উন্মাদনা। খেলোয়াড়দের মনেও খুশির জোয়ার। বেঞ্চ থেকে দৌড়ে এসেও উদযাপন করেছেন ক্রিকেটাররা। কেনই বা করবে না। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে চোকার্স উপাধি বয়ে বেড়ানো দলটা যে এখন বিশ্বকাপের ফাইনালে।
উল্লেখ্য, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি কেপ টাউনে অনুষ্ঠিত হবে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। এদিন, পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে আয়োজক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা।