muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

আইন আদালত

ইমরান-নাকানোকে আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির পরামর্শ

ইমরান-নাকানোকে আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির পরামর্শ

জাপান থেকে আসা দুই শিশুর ভবিষ্যতের কথা বিবেচনার জন্য তাদের বাবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফ ও মা জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানোকে বাইরে বসে নিষ্পত্তির পরামর্শ দিয়েছেন আদালত।

দুই সন্তানকে নিজের হেফাজতে রাখতে বাবা ইমরান শরীফের করা আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার এ উপদেশ দেন ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া।

এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি একই আদালত দুই পক্ষের আইনজীবীদের এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে বলেছিলেন, যাতে আদালতের বাইরে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তারা একসঙ্গে বসতে পারেন। বিচারক বলেন, শিশুদের হেফাজতে নিয়ে আদেশ দেওয়া একটি সংবেদনশীল বিষয়। একজন জাপানি নাগরিক বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত।

তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালের জুলাইয়ে হোলি আর্টিসান ক্যাফে হামলায় জাপানি প্রকৌশলীদের মৃত্যুতে আমাদের বড় ক্ষতি হয়েছে। এখন আমি এমন কোনো আদেশ দিতে চাই না, যা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে।’

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে ইমরান শরীফ (৫৮) ও জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো (৪৬) জাপানের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিয়ের পর টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তারা তিনজনই টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের শিক্ষার্থী ছিল।

২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে (বড় ও মেজো) নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ছোট মেয়ে জাপানে আছে।

এরপর মেয়েদের ফিরে পেতে একই বছরের ১৮ জুলাই বাংলাদেশে আসেন মা এরিকো। তাদের ফিরে পেতে ১৯ আগস্ট হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। অন্যদিকে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে পৃথক রিট করেন ইমরান।

পৃথক রিটের ওপর শুনানি নিয়ে দুই শিশু তাদের বাবা ইমরানের হেফাজতে থাকবে বলে একই বছরের ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট আদেশ দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এরিকো; যা চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।

এরিকোর করা আবেদন (লিভ টু আপিল) নিষ্পত্তি করে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আদেশে বলা হয়, ঢাকার পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটি (২০২১ সালে শিশুদের বাবার করা) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাপান থেকে আসা দুই শিশু তাদের মায়ের হেফাজতে থাকবে। তবে শিশুদের বাবা তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন বলে আদেশে বলা হয়।

আপিল বিভাগের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পারিবারিক আদালতকে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদেশে আরও বলা হয়, মামলার পারিপার্শ্বিক বিষয় ও শিশুদের স্বার্থ বিবেচনায় তাদের এই আদালতের এখতিয়ারের বাইরে (দেশের বাইরে) নেওয়া যাবে না। তবে দুই সন্তানকে নিয়ে জাপানে যাওয়ার জন্য গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে রাজাধানী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান এরিকো নাকানো। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।

Tags: