করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহীনুল ইসলাম বলেন, বোরো ধানের সবচেয়ে বড় বালাইয়ের মধ্যে অন্যতম বালাইয়ের নাম ব্লাস্ট। এ সময়ে ব্রি- ধান ২৮ ও ২৯ এর মধ্যে এ রোগের প্রবনতা সবচেয়ে বেশী লক্ষ্য করা গেছে। এর কারণ ব্রি- ধান ২৮ ও ২৯ জাতের ধানে রোগ সহিষ্ণুতা কমে গেছে। এছাড়াও এ জাত দুটির উদ্ভাবনীকাল প্রায় তিন দশক দীর্ঘ হওয়াও রোগ সহিষ্ণুতা অনেক কমে গেছে। তাই এ জাত দুটির আাবাদ এখনই আমাদের বন্ধ করতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর করিমগঞ্জ’র আয়োজনে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা হলরুমে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ-।। প্রজেক্ট (এনএটিপি-২) এর আওতায় অনুষ্ঠিত সিআইজি কংগ্রেস অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কৃষকদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন এ সরকারি কর্মকর্তা।
কর্মকর্তা জানান, এ বছর ব্লাস্ট রোগের কারণে ব্রি- ধান ২৮ ও ২৯ আবাদ করে কৃষকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষকরা এ জাত দুটি’র আবাদ বন্ধ না রাখলে সামনে খাদ্য নিরাপত্তায় চরম ভয়াবহতা দেখে দিতে পারে।
কংগ্রেসে এক কৃষক এ থেকে উত্তোরণের উপায় জানতে চাইলে কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ব্রি- ধান ২৮ এর পরিবর্তে ব্রি- ধান ৮৮ এবং ব্রি- ধান ২৯ এর পরিবর্তে ব্রি- ধান ৮৯ আবাদ করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, যেখানে ব্রি- ধান ২৮ এর ফলনকাল ১৩৫-১৪০ দিন ও ফলন হেক্টরপ্রতি ৫ থেকে ৬ মেঃ টঃ সেখানে ব্রি- ধান ৮৮ ফলনকাল ১৪০-১৪৩ দিন ও ফলন হেক্টরপ্রতি ৭.৫ থেকে ৮.৫ মেঃ টঃ।
যেখানে ব্রি- ধান ২৯ এর ফলনকাল ১৫৫-১৬০ দিন ও ফলন হেক্টরপ্রতি ৭ থেকে ৮ মেঃ টঃ সেখানে ব্রি- ধান ৮৯ এর ফলনকাল ১৫৪-১৫৮ দিন ও ফলন হেক্টরপ্রতি ৮ থেকে ৯ মেঃ টঃ।
কংগ্রেসে আসা করিমগঞ্জ পৌরসভার চরপাড়া এলাকার কৃষক রহিম মিয়া বলেন, আমি এবার চার কাঠা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের বোরো ধান চাষ করেছি। আমার সম্পূর্ণ জমির ধানের শিষ একেবারেই শুকিয়ে সাদা হয়ে গেছে। ধান কেটেছি। শিষে ধান নেই। শুধু চিটা আর চিটা। আমাদের এই নরসুন্দা নদী চড়ে অন্তত পাঁচ-ছয়জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এ বছর বোরো মৌসুমে ব্রি- ধান ২৮ চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পৌরসভার আশুতিয়া পাড়া এলাকার কৃষক রুস্তম আলীর অভিযোগ, বীজ কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ তা আমরা জানিনা, সরকারীভাবে এই বীজগুলো বন্ধ করে দিলেইতো হয়।
উপজেলা বীজ ও সার মনিটরিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার বসু বলেন, ব্রি- ধান ২৮ ও ২৯ পুরোনো জাতের ধান। এ জাতের ধানে ব্লাস্টের সংক্রমণ বেশি হয়। আমরা প্রথম থেকে কৃষকদের এ জাতের ধান লাগাতে নিরুৎসাহিত করছি। আমরা অচিরেই এ জাতের ধান আবাদে কৃষকদের নিরুৎসাহী করতে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে গণসচেতনামূলক ক্যাম্পেইন করবো।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোছাঃ ফারহানা কনক’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রিফাত আলম জনি, সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আজিজুল মতিন, কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম মাষ্টার, কিরারচর সিআইছি’র সভাপতি শামছুনন্নাহার, সাকুয়া পূর্বপাড়া সিআইজি’র সভাপতি খাইরুল ইসলাম প্রমূখ।