মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ- বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘রামপালেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে। তবে জায়গাটি সুন্দরবন থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মানুষের জীবিকার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হবে।
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।’
বুধবার জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
এর আগে গত ১৬-১৮ এপ্রিল সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিনিধিদলের সদস্যরা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে যান। আজ সংবাদ সম্মেলনে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখন যারা জীবিকার প্রয়োজনে সুন্দরবনে যায়, তারা রামপালে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটলে বনমুখী হবে না। সুন্দরবনে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মধু সংগ্রহ, কাঠ কাটতে এবং শিকার করতে যায়। এজন্য বাঘ ও কুমিরের আক্রমণ মোকাবিলা করতে হয়। রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সুন্দরবনে মানুষের প্রবেশ কমে যাবে। কারণ এর ফলে তাদের জীবিকার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হবে। রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।’
সুন্দরবন থেকে ১৮-২০ কিলোমিটার দূরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে, এ দাবি করে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যেখানে প্রকল্পটি হচ্ছে সেখানে বসতি নেই। আবাদী জমি অধিগ্রহণ করা লাগবে না। এটা উপযুক্ত জায়গা। পরিবেশের ক্ষতির যে কথা বলা হচ্ছে, সেখানে আমরা যেটা জেনেছি, সেটা হলো আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির কারণে ঢাকার বাতাসে বর্তমানে যে সালফার ডাই অক্সাইড আছে, তার চেয়ে কম নির্গত হবে। এতে দশমিক ৫ থেকে দশমিক ৯ শতাংশ সালফার সমৃদ্ধ কয়লা ব্যবহার হবে।’
বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে বণ্যপ্রাণীর আবাসস্থল হুমকির মধ্যে পড়বে, পরিবেশবাদীদের এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগে শুনতাম, ৬০০ বাঘ আছে। এখন বলা হয় ১০৬টি। এখন তো বিদ্যুৎকেন্দ্র ইেন, তাহলে বাঘ কীভাবে কমল? স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে যেটা জেনেছি, তা হলো- বর্তমানে পশুর নদী দিয়ে ১০০টি জাহাজ আসা-যাওয়া করে। কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে একটি হয়ত বাড়বে। এতে কি খুব বেশি ক্ষতি হবে?’
বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরোধীদের উদ্দেশে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যারা এর বিরোধিতা করছেন, তারা দেশের কথা ভেবেই কথা বলছেন। দেশের ভালো চান বলেই তারা এ বিষয়ে উদ্বেগ দেখাচ্ছেন। কিন্তু সবার মধ্যে ধারনাটা স্পষ্ট নয়।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রকল্প হিসেবে ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। ‘মৈত্রী সুপার থারমাল’ নামের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুন্দরবনের ইউনেস্কো ঘোষিত হেরিটেজ অংশ থেকে ৬৯ কিলোমিটার এবং সুন্দরবনের প্রান্তসীমা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/20-04-2016/মইনুল হোসেন