প্রতিবারের ন্যায় এবারও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের অন্যতম বৃহৎ ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ৫ লক্ষাধিক মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় দোয়া করা হয়।
রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে মুসল্লিদের সংকেত দিতে শর্টগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। এর মধ্যে জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে তিনটি, ৩ মিনিট আগে দুটি এবং শেষটি জামাত শুরুর ১ মিনিট আগে ছোড়া হয়।
বড় ঈদগাহ, বড় জামাত। বেশি মুসল্লির সঙ্গে নামাজ আদায় করলে দোয়া কবুল হয়- এমন আকর্ষণে সকাল থেকেই শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায়ের জন্য কিশোরগঞ্জ ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে এসেছেন লাখ লাখ মুসল্লি।
এছাড়াও দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের ঈদগাহ মাঠে আসার সুবিধার্থে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুইটি স্পেশাল ট্রেন যাতায়াত করে।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ময়দানে নামাজ আদায় করেন শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
এদিকে ঈদগাহ ময়দানে ছিল চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিশোরগঞ্জ শহর এবং আশপাশের এলাকায় বাড়ানো হয় গোয়েন্দা নজরদারি। বিজিবি, র্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্যের নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দেওয়া হয় শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। এছাড়াও সিসি ক্যামেরা, ড্রোন ও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে ঈদগাহের ভেতর ও বাইরের এলাকা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হয়।
এবার শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিদের প্রবেশের জন্য মোট ২৫টি ফটকের মধ্যে ৫টি প্রবেশপথ উন্মুক্ত রাখা হয়। এসব প্রবেশপথে স্থাপিত আর্চওয়ে দিয়ে মুসল্লিরা শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করেন।
এর আগে কয়েক দফা মেটাল ডিটেক্টরে সবার দেহ তল্লাশি করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের ছাতা বা কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে ময়দানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শুধু জায়নামাজ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের মতে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’, এরপর ধীরে ধীরে সেই ‘সোয়া লাখিয়া’ পরিচিত হয়ে ওঠে শোলাকিয়া নামে।