muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

বগুড়ায় মুক্তিযোদ্ধার সংবাদ সম্মেলন

বগুড়ায় মুক্তিযোদ্ধার সংবাদ সম্মেলন

বগুড়ায় পারিবারিকভাবে অত্যাচারের অভিযোগ এসে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মাহফুজার রহমান (৭০) নামের এক মুক্তিযোদ্ধা। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আমি নিজের জীবনকে বাজী রেখে বহু সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে দেশকে স্বাধীন করেছি। ১। মো: মুকুল হোসেন, পিতা: মো: মজিবর রহমান প্রাং, ২। মো: লাভলু বেপারী, পিতা: মৃত: মোসলেম উদ্দিন বেপারী, ৩। মো: মাহবুবুর রহমান, পিতা: অজ্ঞাত, (সাবেক ব্যবস্থাপক সোনালী ব্যাংক লি: সোনাতলা শাখা, বগুড়া) ৪। মো: মাহবুবুর রহমান, পিতা: অজ্ঞাত, (বর্তমান ব্যবস্থাপক সোনালী ব্যাংক লি: সোনাতলা শাখা, বগুড়া) ১নং সাং: হাবিবের বাইগুনি, থানা: গোবিন্দগঞ্জ, জেলা: গাইবান্ধা, ২নং সাং: শাহবাজপুর, থানা: সোনাতলা, জেলা: বগুড়াগনের মত আমি আজ কিছু স্বার্থশ্বেদ্ধী দাদন ব্যবসায়ীর কবলে পরে সর্বশান্ত হয়ে পরেছি। উক্ত ব্যক্তিরা আমাকে জিম্মি করে আমার যাবতীয় কাগজ পত্র আটকে রেখে প্রায় ২৬,৬০,০০০/- (ছাব্বিশ লক্ষ ষাট হাজার) টাকা অর্থ আত্মসাত করে চলেছেন।

২০১৬ সালে আমি আমার ১টি সন্তান ক্যান্সার নামক দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয় এবং আমার স্ত্রী জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন দেশে তাদের চিকিৎসা সম্ভব না হওয়ায় ভারতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু টাকার অভাবে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় নাই। আমি তখন নিরুপায় হয়ে এলাকার কুখ্যাত দাদন ব্যবসায়ী মুকুল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত মুকুল ও লাভলুর নিকট গিয়ে স্ত্রী ও সন্তানের চিকিৎসা বাবদ ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) টাকা কর্জ চাহিলে কুখ্যাত দাদন ব্যবসায়ী মুকুল ও লাভলু উক্ত টাকা ১৫টি ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর করিয়া দিতে বলে। আমি তখন স্ত্রী ও সন্তানের জীবন বাঁচানোর তাগিদে আসামীর শর্ত মেনে নিয়ে গত ১৯/০৬/২০১৬ইং তারিখে উক্ত মুক্তিযোদ্ধা সনদ সহ যাবতীয় কাগজ পত্র ও ১৫টি চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়া দেই। তৎপর হইতে উক্ত ব্যক্তিগন ষড়যন্ত্র মুলক ভাবে প্রতারনা করিয়া প্রথমে আমাকে দ্বারা ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টকা ঋণ উঠাইয়া লইয়া উক্ত ব্যাক্তিদেরকে দেয়া ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) কর্জের টাকা পরিশোধ করিয়া নেয়। কিন্তু এরপরও উক্ত ব্যক্তিগন আমার মুক্তিযোদ্ধার সনদ পত্র সহ অন্যান্য কাগজপত্র ফেরত না দিয়ে পুনরায় নিজেরাই উক্ত ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সহিত যোগ সাজস করিয়া নতুন ভাবে চেকের পাতায় আমার পরিবর্তে উক্ত ব্যাক্তিরাই জাল স্বাক্ষর করিয়া জালিয়াতি মুলক ভাবে আমার মুক্তিযোদ্ধার ভাতা সহ বোনাসের যাবতীয় টাকা উত্তোলন করিয়া আত্মসাত করিয়াছে। আমি কোন সময় উক্ত ব্যাক্তির নিকট টাকা চাইতে গেলে কুখ্যাত দাদন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্যগন আমি একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন এবং থালা নিয়ে রাস্তায় বসতে বলে ও দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে যেতে বলেন। উক্ত রুপ অবস্থায় টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় আমার স্ত্রী ও সন্তান ইতিমধ্যে চিকিৎসার অভাবে মারা গিয়াছে। এখানে উল্লেখ্য যে, সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদানের ম্যাসেজ ও বোনাসের ম্যাসেজ সহ যাবতীয় সকল তথ্য মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে তাহা জানিয়ে দেয়। কিন্তু উক্ত প্রতারক চক্র এই সুযোগে কতিপয় অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তা/কর্মচারীদের যোগ সাজসে আমার প্রদত্ত মোবাইল নম্বর ০১৭৫৭-৭১১৪০৯ যাহা ব্যাংক হিসাবে পূর্বে আমার

হিসাবে জমা দেয়া ছিল। প্রতারক চক্র জালিয়াতি করে উক্ত মোবাইল নং পরিবর্তন করে বর্তমানে ১নং ব্যক্তির মোবাইল নাম্বর ০১৭৩৫-৩৭৩৫৩৩ ব্যাংকে জমা দিয়াছে। যে কারণে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা সহ অন্যান্য সকল তথ্য সংক্রান্ত যাবতীয় ম্যাসেজ আমার মোবাইলে না এসে ১নং ব্যাক্তির মুকুলের মোবাইলে আসে এবং উপরোক্ত ব্যক্তিগন য়ড়যন্ত্রমুলক ভাবে আমার বীরমুক্তিযোদ্ধার যাবতীয় ভূয়া চেকে আমার পরিবর্তে উক্ত ব্যক্তি নিজেরাই জাল স্বাক্ষর করে জালিয়াতি মুলে উক্ত ভাতার টাকা সহ বোনাসের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করিয়া আসিতেছে। আমাকে একটি টাকাও দেয় নাই। আরও প্রকাশ থাকে যে, মুকুল ও লাভলু একটি দাদন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্য। তারা অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগ সাজসে আমার মুক্তিযোদ্ধার সনদ সহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা রেখে তার বিনিময়ে উক্ত ব্যাক্তিগন প্রথমে ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা ও পরবর্তীতে আরও ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা ঋণ উঠাইয়া আত্মসাত করিয়াছে। যাহা বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা হইতে কর্তন হইতেছে। আমি এ বিষয়ে কোন কিছুই অবগত নহি। উক্ত ব্যাক্তিরাই আমাকে না জানাইয়া বা কোন কিছু বুঝিতে না দিয়া আমার কাগজপত্র দ্বারা জালিয়াতি করিয়া আমার মুক্তিযোদ্ধার সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্র জিম্মি করিয়া রাখিয়া উক্ত কাগজপত্র দ্বারা আমার স্বাক্ষর জাল করিয়া প্রথমে ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা এবং পরবর্তীতে আরও ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা ঋণ উঠাইয়া লইয়া যাবতীয় টাকা আত্মসাত করিয়াছে ও মুক্তিযোদ্ধার মাসিক ভাতা জাল চেক দ্বারা জাল স্বাক্ষর করিয়া যাবতীয় টাকা উত্তোলন করিয়া আত্মসাত করিয়াছে। এখানে উল্লেখ্য ২০১৬ সাল হইতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৩৬ মাস প্রতি মাসে ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা হিসাবে ৩,৬০,০০০/- (তিন লক্ষ ষাট হাজার) টাকা ২০১৯ সাল হইতে প্রতি মাসে ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা হিসাবে ৪০ মাসে মোট ৮,০০,০০০/- (আট লক্ষ) টাকা এবং ঋণ বাবদ ১৫,০০,০০০/- (পনেরো লক্ষ) টাকা উঠাইয়াছে। ইহাতে আমার মোট ২৬,৬০,০০০/- (ছাব্বিশ লক্ষ ষাট হাজার) টাকা আমাকে না দিয়া উক্ত ব্যক্তিরাই আত্মসাত করিয়াছে এপ্রেক্ষিতে আমি নিজে গত ১৩/০৪/২০২৩ইং তারিখে মুকুলের দোকান ঘরে গিয়া লাভলুর উপস্থিতিতে আমার প্রদত্ত মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র সহ যাবতীয় কাগজপত্র ফেরত প্রদান সহ উত্তোলনকৃত চেক বহি ও মুক্তিযোদ্ধা সনদের বিনিময়ে আমার পরিবর্তে উক্ত ব্যক্তিগন কর্তৃক জাল স্বাক্ষর দিয়া উঠানো ভাতা, বোনাস ও ঋণ বাবদ (৩,৬০,০০০+৫,০০,০০০+১০,০০,০০০+৮,০০,০০০) = ২৬,৬০,০০০/- (ছাব্বিশ লক্ষ ষাট হাজার) টাকা পরিশোধ করিতে বলিলে উপরোক্ত ব্যক্তিগন অত্যান্ত উত্তেজিত হয়ে উঠে।

এসময় মুকুল হুংকার দিয়া বলে যে, উক্ত মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র ফেরত নিতে হলে তাদেরকে ২০,০০,০০০/- (বিশ লক্ষ) টাকা চাঁদা দিতে হবে। আমি তখন চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করিলে মুুকুল ও লাভলু আমাকে বেদম মারপিট করিতে থাকে। এর একপর্যায়ে মুকুল ও লাভলু একটি রাশি দ্বারা আমার গলায় ফাঁস লাগাইয়া দুই দিক হইতে টানিয়া ধরে। এতে আমার শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হইয়া জিহবা বাহির হইয়া মরানাপন্ন হইয়া পরি। এসময় মুকুল ও লাভলু আমাকে পাঁজা কোল করিয়া ধরে দরজার সামনে এনে গলা ধাক্কা দিয়ে বাহিরে রাস্তায় ফেলে দেয়। রাস্তায় পড়ার পর আমার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হইয়া (হার্ট এ্যাটাক) করে। তৎক্ষনাত আমার প্রতিবেশী লোকজন আমাকে একটি সি এন জি যোগে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজে আই সি ইউ বিভাগে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করায়। আমি উক্ত হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর আমি কিছুটা সুস্থ হই। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা উক্ত ব্যক্তিগন কুখ্যাত দাদন ব্যবসায়ী আমার বীর মুক্তিযোদ্ধার যাবতীয় সনদ পত্র জিম্মি কওে রাখিয়া ও ঋন উত্তোলন করিয়া সর্ব মোট ২৬,৬০,০০০/- (ছাব্বিশ লক্ষ ষাট হাজার) টাকা আত্মসাত করিয়াছে।

উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে আমি নিজে বাদী হয়ে জেলা বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিঃ আদালতে সন্ত্রাসীদের নামে একটি মোকদ্দমা দায়ের করি যাহার মামলা নাম্বার ১১০সি/২০২৩ (সোনাতলা)। উক্ত মোকদ্দমা দায়ের করার পর হইতে উপরোক্ত ব্যক্তিগন আমাকে ও আমার স্বাক্ষীগণকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি ধামকি দিচ্ছে এবং মামলা তুলে না নিলে আমাকে অপহরন করিয়া নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হবে বলে ভয় দেখাচ্ছে। উক্ত ব্যক্তিগন বিভিন্ন স্থানে আমাকে খুজে বেড়াচ্ছে এবং বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট অকথ্য ভাষায় গালি দিচ্ছে। এলাকার শতশত জনগন তার জলজন্ত প্রমান ও বর্তমানে আমি উক্ত ব্যক্তিগনের ভয়ে ও হুমকিতে আমি নিজ বাড়ীতে বসবাস করতে না পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

সাংবাদিক ভাইয়েরাআপনারা একটি রাষ্ট্রের তৃতীয় শক্তি হিসাবে পরিচিত। আপনাদের নিরপেক্ষ লেখনী ও সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বগুড়ার উল্লেখিত উপরোক্ত ব্যক্তিগনের বিরুদ্ধে আমার উপর অত্যাচার নির্যাতনের প্রকৃত রহস্য উদঘটনের জন্য কামনা করছি। উপরোক্ত ব্যক্তিগন আমাকে ও আমার পরিবারের উপর অত্যাচার নির্যাতন সহ ও আমার মুক্তিযোদ্ধার সনদসহ যাবতীয় কাজগ পত্র জিম্মি করে রেখে আমার সম্মানী বেতন, ভাতা আত্মসাত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যক্তির সহিত যে, সকল কথা র্বাতা বলেছেন তার সকল রেকর্ড প্রমান পত্র আমার নিকট রয়েছে।

কলম সৈনিক বন্ধুগন সর্বশেষে আমি ও আমার পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা সহ উক্ত ব্যক্তিগনের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, আই,জি,পি - ডি,আই,জি রাজশাহী, জেলা প্রশাসক বগুড়া ও পুলিশ সুপার, বগুড়ার এবং থানা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আকুল আবেদন জানাইতেছি।

Tags: