পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। খবর পেয়ে পুলিশ লাঠিপেটা, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার শহরের বনানী এলাকায় বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) আহমাদ মাঈনুল হাসান এ ব্যপারে জানান।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল থেকে শহরে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভার নেতা-কর্মীরা। সকালে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তি সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা কর্মীরা। এ সময় হঠাৎ দুপক্ষের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সকাল ১০টায় পটুয়াখালী শহরের বনানী এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর বক্তব্য চলাকালে বেলা ১১টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভির হাসান আরিফের নেতৃত্বে একটি শান্তি-মিছিল সমাবেশের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সংঘর্ষে জড়ায় উভয় পক্ষ।
এক পর্যায়ে উভয় দলের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিপেটা, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় মুসলিমপাড়া মোড় থেকে বনানী পর্যন্ত পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে মাই টিভির জেলা প্রতিনিধি মশিউর রহমান বাবলু ও সময় টিভির ক্যামেরা পারসন সুজন দামসহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টির অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ হামলা চালিয়ে আমাদের ১০ থেকে ২০ জন কর্মীকে আহত করেছে।
অপরদিকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভির হাসান আরিফ বলেন, সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আমরা মিছিল করলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছে।
এদিকে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন, সকালে নেতা-কর্মীরা শহরের তিতাস সিনেমা হল মোড়ে শান্তি সমাবেশ করেছে। এ সময় ছাত্রদলসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ৭ থেকে ৮ জন আহত হয়েছে।
তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্যদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, সংঘর্ষের পর দুপুর সাড়ে ১২টায় শহরের আবাসিক হোটেল হিলটনের তৃতীয় তলায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য কোন নির্বাচন হবে না। এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টিসহ অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।