muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের তুলা পোকামুক্তকরণ ছাড়াই খালাস করবে বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের তুলা পোকামুক্তকরণ ছাড়াই খালাস করবে বাংলাদেশ

এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা বাংলাদেশের বন্দরে ফিউমিগেশন বা পোকামুক্তকরণ করার প্রক্রিয়া ছাড়াই খালাস করা যাবে। গতকাল রোববার সচিবালয়ে কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তারের সঙ্গে মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ব্রেনডেন লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে উঠে আসে তুলা আমদানির বিষয়টি। তখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বাংলাদেশ সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শীর্ষ আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র। গেল বছর পোশাক রপ্তানির মোট আয়ের ২০ শতাংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। আর তাই দেশটি বাংলাদেশে তুলা রপ্তানি করতে কয়েক বছর ধরেই মরিয়া। তবে সমস্যা দেখা দেয় তুলার পোকামুক্তকরণে। পোকামুক্ত করতে সময় লাগত ৫-৬ দিনের মতো। সম্প্রতি সেই সংকট কাটিয়ে উঠেছে দেশটি।

কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার জানান, এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা তুলা আর কোয়ারেন্টাইন করতে হবে না। এতে বাংলাদেশি আমদানিকারকদের শত শত কোটি টাকা ব্যয়-সাশ্রয় হওয়ার পাশপাশি পাঁচ দিন অপেক্ষার অবসান হবে।

২০২২ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি কারিগরি প্রতিনিধিদলের যুক্তরাষ্ট্র সফরের ধারাবাহিকতায় এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। প্রতিনিধিদলটি যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সরজমিনে যুক্তরাষ্ট্রের তুলা উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিদর্শন করেছে এবং তাদের কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা কৌশল যাচাই করে দেখেছে।

ওই সময়ে তারা তুলা প্রক্রিয়াকরণে যে কৌশলগুলো অনুসরণ করে জিনিং বা তুলা থেকে বীজ ও ময়লা পরিষ্কার করা, লিন্ট ক্লিনিং বা পাতা, ঘাস বা অন্যান্য উপাদান সরিয়ে ফেলা, তুলার বেল তৈরির সময় কঠোরভাবে চাপানো দেখে আশ্বস্ত হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলাতে বোল উইভিল বা তুলার ভোমরা পোকা থাকার কোনো শঙ্কা নেই।

বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তুলা আমদানিকারক দেশ, যা দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের তুলার সপ্তম বৃহত্তম রপ্তানি বাজারে পরিণত করেছে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের তুলা রপ্তানির আর্থিক মূল্য ২০২২ সালে ৪৭৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ছাঁড়িয়েছে। আবার বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ।

আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা ফিউমিগেশন বা বিষবাষ্পীকরণের মাধ্যমে পতঙ্গমুক্ত করার প্রক্রিয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় একদিকে আমদানিকারকের কাছে তুলা পৌঁছাতে দেরি হতো। অন্যদিকে, বাংলাদেশি আমদানিকারকদের প্রতিবছর শত শত কোটি টাকা এই বাবদ খরচ করতে হতো।

এ প্রসঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, যৌথভাবে কাজ করার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে পারা এবং একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে সমৃদ্ধি বাড়ানো ও বাণিজ্যের বাধাগুলো দূর করার একটি বড় উদাহরণ যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন, মার্কিন ভোক্তারা যেহেতু বাংলাদেশে উৎপাদিত টেকসই, উচ্চমানের পোশাকের ওপর নির্ভর করে তাই বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়াতে উচ্চমানের মার্কিন তুলা প্রয়োজন রয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকও এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয় জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির বিকাশ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ এবং বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা অব্যাহত রাখতে আগ্রহী।

Tags: