‘শান্তি ও নিরাপত্তায় বাংলাদেশ একটি নির্ভরযোগ্য নাম’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যে কোনো সংঘাত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চাই। আমরা অস্ত্র প্রতিযোগিতা চাই না। বাংলাদেশ সবসময় শান্তিতে বিশ্বাস করে। শান্তির জন্য যা যা করার দরকার, বাংলাদেশ তাই করবে।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গত ৩৫ বছর ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ এবং সক্রিয় অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে অন্যান্য দেশ শান্তিরক্ষী পাঠাতে চায়নি, সেখানেও আমরা শান্তিরক্ষী প্রেরণ করেছি। শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ একটি নির্ভরযোগ্য নাম।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বজন স্বীকৃত বিশ্বের বুকে রোল মডেল। এই অর্জনের পেছনে রয়েছে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর চৌকস ও পরিশ্রমী নিবেদিত প্রাণ সদস্যদের অবদান ও আত্মত্যাগ। আমরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ৩৫ বছর উদযাপন করছি। অত্যন্ত গৌরব ও আনন্দের এই শুভক্ষণে আমি জাতিসংঘ মিশনে কর্মরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীসহ সকল শান্তিরক্ষীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শান্তির বার্তাকে স্থায়ী করতে এবং এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়নে ‘কালচার অব পিস’ প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য বলে আমি বিশ্বাস করি।’
তিনি বলেন, ‘নারী অধিকার এবং জেন্ডার সমতা নিশ্চিতে আমাদের পদক্ষেপ ‘উইমেন পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি এজেন্ডা’ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীতে নারীরা আগে ছিলেন না। আমি উদ্যোগ নিয়েছিলাম। বিমান বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, নৌ বাহিনী সকল ক্ষেত্রে আমাদের নারীরা এখন সমান তালে কাজ করে যাচ্ছে। শান্তিরক্ষী মিশনে নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে- বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। অবকাঠামো উন্নয়ন করে যাচ্ছি। পদ্মা সেতুর মত সেতু আমরা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করে সারা বিশ্বকে দেখিয়েছি, জাতির পিতা বলেছিলেন ‘কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’ আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু বিশ্ব শান্তি রক্ষা নয়, নিজের দেশেও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করছি আমরা। ২০০৮ সালের পর থেকে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে এবং স্থিতিশীল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আছে বলেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশই পারে একটি দেশকে উন্নয়নশীল করতে। আমরা চাই, ২০৪১ সালের মধ্যে এই বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা স্মার্ট জনগোষ্ঠী গড়ে তুলব, স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তুলব, স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলব’ আমাদের আর্থ সামাজিক সকল উন্নতি হবে স্মার্ট।’