বিয়ের ১২ বছর ধরে নিঃসন্তান থাকার নানা অশান্তি আর গ্লানি অবশেষে ঘুছিয়ে এক সঙ্গে পাঁচটি সন্তানের জননী হয়েও আরজিনা বেগমের কপালে সুখ সইলো না। গত মঙ্গলবার রাতে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই সন্তানের জন্ম দেন। এই আনন্দে যেন তাদের ঘরে বাঁধভাঙ্গা চাঁদের আলো যেন ছড়িয়েছিল।
কিন্তু পাঁচ সন্তানের মধ্যে চারটি সন্তানের কয়েকদিনের ব্যবধানে মুত্যুর ঘটনায় সে আলো এখন ক্রমাগত আঁধারে ঢেকে যেতে বসেছে। গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার কিসামত শেরপুর গ্রামের সিরিকুল শেখের স্ত্রী আরজিনা বেগম (৩০)। প্রায় ১২ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়।
স্বামী ঢাকায় একটি পোষাক কারখানায় চাকরি করেন। কিন্তু বিয়ের বারোর বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও মাতৃত্বের স্বাদ পাননি আরজিনা বেগম। এ নিয়ে পরিবারের মাঝে ছিল অশান্তি আরা নানা গ্লানির অপবাদ। অনেকে তাকে অপয়া নারী হিসেবে আরচোখে দেখতো।
নীরবে নিঃসন্তান থাকার অপমান তাকে সইতে হয়েছে। সন্তানের জন্য তাকে স্বামী বিভিন্ন চিকিৎসক ও কবিরাজসহ পীরের দরবারে মানত করে ফিরেছেন।
অবশেষে দীর্ঘ ১২ বছর পর তিনি সন্তান সম্ভবা হন। সন্তান জন্ম দেয়ার সময় ঘনিয়ে আসলে তার শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। পরে তাকে মঙ্গলবার বিকেলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
সেখানে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিভাগের চিকিৎসক সহকারি অধ্যাপক সিরাজুম মুনিরা ডেইজীর অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এর পর স্বাভাবিক প্রসব না হওয়ায় মঙ্গলবার রাতে অস্ত্রপচারের মাধ্যমে এক সঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দেন।
এদের মধ্যে তিনটি ছেলে এবং দুটি মেয়ে সন্তান।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, জন্মের পর প্রথম দুদিন পরে একটি সন্তান মারা যায়। পরের দিন দুইটি এবং সর্বশেষ শনিবার দুপুরে আরও একটি সন্তান মারা যায়। এখন একটি ছেলে সন্তান সুস্থ আছে।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/24-04-2016/মইনল হোসেন