রাজধানীর আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর বিষয়ে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। তবে আজ বুধবার এ আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে, আফতাবনগরে পশুর হাট বসাতে আইনি কোনো বাধা থাকল না। আজ বুধবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
পরিবেশ সংরক্ষণের দাবিতে গত ১৫ মে আফতাবনগরে গরুর হাট না বসানোর নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন হাউজিং ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়।
পরে গত ২২ মে আফতাবনগরে পশুর হাট না বসানোর বিষয়ে দেওয়া ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃক বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাবনগর ব্লক ‘বি’ থেকে ‘এইচ’ পর্যন্ত খালি জায়গা ইজারা দেওয়া কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছিল।
তবে রিটের আগে ডিএনসিসি মেয়রের কাছে আফতাবনগরের বাসিন্দাদের পক্ষে শেখ মাহমুদ উজ্জ্বল আবেদন করেন। এতে বলা হয়, জহিরুল ইসলাম সিটিতে (আফতাবনগর) বসবাসরত লোকজন ঈদুল আজহার আগে ও পরে প্রায় এক মাস অস্থায়ী হাট বসানোর কারণে ব্যাপকভাবে মানবেতর জীবনযাপন করেন। যেহেতু চলাচলের প্রধান সড়কের ওপর অস্থায়ী গরু-ছাগলের হাট বসে বলে এখানে বসবাসরত নাগরিকদের যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এসময় কোনো লোক অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কেউ মারা গেলেও তার মরদেহ বহন করা দুরূহ হয়ে পড়ে।
এছাড়া গরু-ছাগলের হাট বসানোর কারণে আবাসিক এলাকাটির বসবাসের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। গরু-ছাগলের নানাবিধ বর্জ্যে এলাকাটির পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হয়। এছাড়া প্রধান সড়কটিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সারা বছরই প্রধান সড়কটিতে খানাখন্দ থাকায় আফতাবনগরে বসবাসরত নাগরিকদের যাতায়াতে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এর আগে গত ২ মে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (স্থানীয় সরকার বিভাগ) পক্ষে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহে আলমের সই করা সম্পত্তি বিভাগ ইজারা/বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র ঘোষণা করেন। দরপত্রে ঈদুল আজহার দিনসহ পাঁচদিন গরুর হাটের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে প্রথম পর্যায়ে দরপত্র বিক্রি ১৫ মে, আর ১৬ মে সাড়ে ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। এভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে দরপত্র বিক্রির পর ১৯ জুন পর্যন্ত দরপত্রের বাক্স ও খাম খোলার পর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সর্বোচ্চ দরদাতাকে শিডিউল দেওয়া হবে।