ঈদের পর ১৯ থেকে ২১ জুলাই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোড মার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিদ্যুতের লোডশেডিং ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোর প্রতিবাদে সচিবালয় বিক্ষোভ কর্মসূচির আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দুপুর ১২টায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা সমবেত হয়। সমাবেশের পর দুপুর ১টায় মিছিল নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা তিন শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে তোপখানা রোড, পুরানা পল্টন মোড় হয়ে জিরো পয়েন্ট কাছে গেলে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। এ সময় তারা সেখানে প্রায় আধাঘণ্টা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।
সমাবেশে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এই সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংবিধানের সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে আমরা আগামী ১৯ থেকে ২১ জুলাই গণতন্ত্র মঞ্চ ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোড মার্চ করব। এর আগে গণতন্ত্র মঞ্চ জেলায় জেলায় ও বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করবে। ঢাকায় পদযাত্রা করা হবে। এ সব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জনগণ শুধু সরকার বদল নয়, শাসন ব্যবস্থা বদলের লড়াইকে জয়যুক্ত করবে এই আশাবাদ আমরা ব্যক্ত করছি।’
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, দেশের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এই সরকারের অবস্থা ডায়রিয়া ও কলেরার মতো হয়েছে। দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, মানবাধিকার, সুশাসন কিছুই নাই। এদের চলে যেতে হবেই। মাঝে মাঝে সরকারি দলের মন্ত্রীরা এমন কথা বলে, এদের পায়ের তলায় মাটি আছে কিনা সেটাও জানে না। ওদের যে মেইন খুটা তার নিচে মাটি নাই, ওটা নড়বড়ে অবস্থা।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘জাপানি রাষ্ট্রদূত বলে দিনের ভোট রাত্রে হয় আমরা তো দেখিনি। এখন আমেরিকা বলে তোমাদের ভোট ঠিক হয়নি, ইউরোপও বলে। সারা দুনিয়া বলে বাংলাদেশে এখন একটা ভোট ডাকাত সরকার আছে। সে জন্য আমরা বলি তোমাদের চলে যেতে হবে। আমরা কর্মসূচি নিয়ে ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছি। নভেম্বর ইজ দি কাটিং টাইম, ডিসেম্বর ইজ দি কাটিং টাইম। এর মধ্যে সরকারের কাটাকাটি শেষ করতে হবে। নিজের থেকে করবে নইলে আমরা করব। সেই জন্য ঈদের পরে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের প্রত্যয় ঘোষণা করছি।’
বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এক-এগারোর পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মূখার্জী লিখেছিলেন কিভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে হস্তক্ষেপ করেছিলেন। তার আত্মজীবনীতে তিনি তা উল্লেখ করেছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের কথা তো সবার মনে আছে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার দিনবদল। হাতেগোনা কয়েকটি দিন বাকি। এই কোরবানি ঈদের পর এই সরকার আরেকটি ঈদ দেখতে পাবে না। তার আগেই এই সরকারকে বাংলাদেশের মানুষ বিদায় দেবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকার টিকে আছে ভোট ছাড়া একটা লুটপাটের ওপরে। তারা ভোট দিতে দেয় না। এই সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিভিন্ন অংশকে এবং বিদেশি শক্তিকে এমনভাবে খুশি করার চেষ্টা করে, যাতে করে তাদের টিকিয়ে রাখে। এ জন্য আমলা পুলিশসহ সকল রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পয়সা দিয়ে, নানাভাবে লুটের ভাগ দিয়ে এই দেশ চালাচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের হাবিবুর রহমান রিজু, জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারি, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আকবর খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।