ওমান থেকে জি-টু-জি (সরকার টু সরকার) ভিত্তিতে ১০ বছর মেয়াদি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি চুক্তি সই হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় অতিরিক্ত ০ দশমিক ২৫ থেকে ১ দশমিক ৫ এমটিপিএ (মিলিয়ন টন পার এনাম) এলএনজি আনা হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় ২০৩৫ সাল পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ এই এলএনজি কিনতে ওমানের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে পেট্রোবাংলা। প্রথম বছরে চার এবং পরের দুই বছর ১৬ কার্গোর পর ২০২৯ সাল থেকে এলএনজি আসবে ২৪ কার্গো করে বলে ঢাকায় চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে পেট্রোবাংলার বোর্ড সচিব রুচিরা ইসলাম এবং ওমানের পক্ষে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ওকিউটি’র নির্বাহী পরিচালক সাইদ আল মাওয়ালী চুক্তিতে সই করেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, জিটুজি ভিত্তিতে ১০ বছর মেয়াদি ১ থেকে ১ দশমিক ৫ এমটিপিএ এলএনজি আমদানিতে পেট্রোবাংলা ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের (বর্তমান নাম ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড-ওকিউটি) সঙ্গে ২০১৮ সালের ৬ মে এলএনজির সেল অ্যান্ড পারচেজ এগ্রিমেন্ট (এসপিএ) প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
স্বাক্ষরিত চুক্তির আলোকে ওকিউটি বর্তমানে বছরে ১ এমটিপি (১৬ কার্গো) এলএনজি সরবরাহ করছে। জিটুজি ভিত্তিতে ওকিউটি থেকে ১০ বছর মেয়াদে (২০২৬ সালে ৪ কার্গো এলএনজি, ২০২৭ হতে ২০২৮ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১৬ কার্গো এলএনজি এবং ২০২৯ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ২৪ কার্গো এলএনজি যা কম-বেশি ১.৫ এমটিপিএ এলএনজি’র সমতুল্য) আমদানিতে সোমবার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ এলএনজি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বাংলাদেশ গ্যাস অনুসন্ধান কাজ জোরদার করেছে। গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের জন্য পিএসসি (উৎপাদন বণ্টন চুক্তি) হালনাগাদ করা হচ্ছে। এসময় তিনি ওমানসহ সংশ্লিষ্টদের আগত পিএসসিতে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত আব্দুল গাফ্ফার আলবুলুসি, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, ওকিউটি'র নির্বাহী পরিচালক সাইদ আল মাওয়ালী বক্তব্য রাখেন।
দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আনতে ২০১৭ সালে কাতার ও ২০১৮ সালে ওমানের সঙ্গে চুক্তি করে সরকার। এর পর থেকে দুটি দেশ প্রতিবছর এলএনজি সরবরাহ করছে। এর বাইরে খোলাবাজার থেকে তাৎক্ষণিক দামে এলএনজি কেনা হয়।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের পর খোলাবাজারে এলএনজির দাম কয়েক গুণ বেড়ে যায়। গত বছর জুলাই থেকে টানা সাত মাস খোলাবাজার থেকে এলএনজি কেনা ও বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি বাড়াতে তোড়জোড় শুরু করে সরকার।