muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

গ্রেফতার ২ চিকিৎসকের মুক্তি চায় ওজিএসবি

গ্রেফতার ২ চিকিৎসকের মুক্তি চায় ওজিএসবি

রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার চিকিৎসকদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি)। তবে হাসপাতালটির ভুল চিকিৎসা নিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মঙ্গলবার (২০ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে ওজিএসবি গ্রেফতার চিকিৎসক ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগেই শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করায় নিন্দা জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে সেন্ট্রাল হসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে নবজাতকসহ প্রসূতির অপ্রত্যাশিত ও অস্বাভাবিক মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা ও গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে।

প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন দিনগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর গ্রিন রোডে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে মাহবুবা রহমান আঁখি নামের এক নারীকে ভর্তি করা হয়। তখন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে ছিলেন না। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সংযুক্তা আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি তখন ছিলেন দুবাইতে। এরপর ডেলিভারির চেষ্টা সফল না হওয়ায় সিজার করে বাচ্চা বের করে আনা হয়। এর পরদিন সদ্যোজাত শিশুটি মারা যায়।

গ্রিন রোডে ল্যাবএইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ১০ জুন বিকেল ৩টা ৩৯ মিনিটে মাহবুবা রহমান আঁখিকে সেন্ট্রাল হাসপাতাল থেকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে অচেতন অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে অ্যাম্বুলেন্সে আনা হয়েছিল। তার প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণ ও হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল।

প্রায় ১০ দিন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত রোববার দুপুরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে আঁখিও মারা যান।

‘ভুল চিকিৎসায়’ আঁখি ও তার সদ্যোজাত সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় সমালোচনার পরে সেন্ট্রাল হাসপাতাল। জানা যায়, ওই হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক ডা. সংযুক্তা সাহার ফেসবুকে লাইভ ও নানা ধরনের প্রচারণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সেখানে চিকিৎসা নিতে আসতেন রোগীরা। গর্ভাবস্থায় মাহবুবাও সংযুক্তা সাহার অধীনে গত কয়েক মাস ধরে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

সেন্ট্রাল হাসপাতালের ওই ঘটনায় গত বুধবার (১৪ জুন) ধানমন্ডি থানায় মোট পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী। এরপরই ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে গ্রেফতার করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। এরই মধ্যে গ্রেফতার দুই চিকিৎসক দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

জানা গেছে, গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। এমনকি তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।

এদিকে নবজাতকসহ না ফেরার দেশে পাড়ি জমানো মাহবুবা রহমান আঁখির চিকিৎসায় নিজেদের গাফিলতির কথা স্বীকার করেছে সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আঁখির মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশও করেছে হাসপাতালটি। সোমবার (১৯ জুন) হাসপাতালটির সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর ডা. এ টি এম নজরুল ইসলাম এ প্রতিক্রিয়া দেন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আঁখির চিকিৎসায় হাসপাতালের অবশ্যই গাফিলতি ছিল। গাফিলতি ছিল প্রথমত ডা. সংযুক্তা সাহার, তারপর ওটির চিকিৎসকদের। কারণ তখন তারা সিনিয়র ডাক্তারদের ডাকেননি।

Tags: