ব্রিকসে যোগদান নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য অজ্ঞতা ছাড়া কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘পাশ্চাত্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেও ভারত ও আফ্রিকা ব্রিকস ব্যাংক প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম।’
বিএনপি নেতাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এর আগে, আওয়ামী লীগ সরকারের ব্রিকসে যাওয়ার চেষ্টা করে কোনো লাভ হবে না এবং এটি সরকারের একটা সুবিধাবাদী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
এর জবাবে বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কাছ থেকে দেশের জন্য আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। অনুরূপভাবে বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা সরকার ব্রিকস-এ যোগদান করছে। বিএনপির মতো বিদেশি প্রভুদের তুষ্ট করার জন্য আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা রাজনীতি করেন না। দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে।’
বিএনপি জন্মলগ্ন থেকে জামায়াত ইসলামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘ঐতিহ্যভাবেই গোলাম আযমের দল জামায়াতে ইসলামী বিএনপির ঘনিষ্ঠ মিত্র। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি নাগরিক গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিল এবং তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গোলাম আযমকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে।’
‘২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে একাকার হয়ে সরকার গঠন করে এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধুলিস্যাৎ করে। যুদ্ধাপরাধের বিচারের সময় বেগম খালেদা জিয়া জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য আন্দোলন করেছে’, যোগ করেন সেতুমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির শাসনামলে পাকিস্তানি দর্শনের রাজনীতি বাংলাদেশে জোরদার হয় এবং জামায়াত ইসলামের ক্ষমতায়ণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেইসঙ্গে বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশে ফুলেফেঁপে বিষবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের সচেতন মানুষ মাত্রই জানে জামায়াতে ইসলামী হলো বিএনপির বি-টিম।’
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপিকে ভোট না দেওয়ার অপরাধে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া, হরতালের নামে আগুন-সন্ত্রাস ও পেট্রল বোমা মেরে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা, গাছ কাটা, ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার যে ইতিহাস বিএনপি সৃষ্টি করেছিল সেটা বেশি দিন আগের নয়। বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেও দেশের মানুষ বিএনপির সেই সহিংসতার কথা ভূলে যায়নি। আসলে নিজেদের এসব অপকর্ম আড়াল করতেই বিএনপি নেতারা সবসময় অপপ্রচার চালায় এবং সরকারি দলের লোকেদের ওপর দোষ চাপিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগার উপলক্ষ্য খোঁজে।’