প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সম্প্রতি মন্ত্রিসভা বৈঠক জাতীয় গ্রন্থাগার নীতিমালা অনুমোদন করেছে। গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের অধিনে বর্তমানে ৭১টি লাইব্রেরি রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি লাইব্রেরি কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে।’
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও একটি প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, প্রতি জেলা পর্যায়ে একতলা বিশিষ্ট যে লাইব্রেরিগুলো রয়েছে সেগুলো ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি লাইব্রেরি যাতে ডিজিটালাইজড হয় সেভাবেই তৈরি করা হবে। লাইব্রেরিকে আরও বৈচিত্র্যময় ও পাঠ্যক্রমবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এসব লাইব্রেরিতে বসে শুধু বই পড়াই নয়, বিশ্বের যেকোন লাইব্রেরির সঙ্গে যাতে যোগাযোগ রাখা যায়, বই পড়া যায় তার ব্যবস্থা রাখা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার পাবলিক লাইব্রেরিকে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তোলার জন্য ৫২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রন্থগার অধিদপ্তরের বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।’
এসময় তিনি আক্ষেপ করে জানতে চান এবং বলেন, ‘এটি অনেক আগেই আমি ডিজাইনসহ অনুমোদন দিয়েছি কিন্তু কাজ শুরু করতে কেন দেরি হলো? ঠিক সময়ে যদি এটা নির্মাণ শুরু হতো তবে এখন উদ্বোধন করতে পারতাম।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। শুধু জেলাপর্যায় নয়, সংস্কৃতি চর্চাকে নিয়ে যেতে হবে তৃণমূল পর্যন্ত। এজন্য সংস্কৃতিমনস্ক মেধাবী জাতি গঠনে কাজ করা হচ্ছে।’
উদার মানসিকতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা যাতে আরও বিকশিত হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার সংস্কৃতির দর্শন বাস্তবায়ন করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। আর সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে সরকার।’ দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের মেধাবীরা বিকশিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো দেশ বা জাতির ক্ষতি করতে গেলে সংস্কৃতির ওপরেই আঘাত করা হয়। আমাদের সেই জায়গায় আঘাত করেছিল পাকিস্তানি শাসকরা। ১৯৪৮ সালে সেই আঘাত আসে। তারা বলেছিল— ‘বাংলা ভাষায় কথা বলা যাবে না, উর্দু ভাষায় কথা বলতে হবে।’ তারা নানাভাবে আমাদের মাতৃভাষার অধিকারটা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। আমাদের সংস্কৃতিটাই ধ্বংস করতে চেয়েছিল। আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধরে রাখলে ও বিকশিত করলে এর মাধ্যমেই দেশ এগিয়ে যাবে।’