ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সহিংসতায় ৯ জন নিহত হয়েছে। শনিবার রাজ্যে তিন স্তরের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। গুলি, ছুরিকাঘাত ও বোমা হামলায় ভোট গ্রহণ শুরুর চার-পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই নিহতের খবর আসে। খবর এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
শনিবার রাজ্যের ২২টি জেলার ৬৩ হাজার ২২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন, ৯ হাজার ৭৩০টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন এবং ৯২৮টি জেলা পরিষদের আসনে নির্বাচন শুরু হয়।
রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এসব সহিংসতার জন্য একে-অপরকে দোষারোপ করেছে।
কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগ থেকেই হামলা, সংঘর্ষ চলছিল। নির্বাচনের দিন এগুলো প্রকট আকার ধারণ করে। রাজ্যের অসংখ্য জায়গায় গুলির ঘটনা ঘটে। কোথাও কোথাও বোমা হামলাও হয়।
সংবাদমাধ্য জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদে দুই তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তৃণমূল, কংগ্রেস এবং সিপিএমের কর্মীরা।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার বাকচা গ্রাম পঞ্চায়েতের খিদিরপুর গ্রামের ১৪৭ নম্বর বুথে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে ভোটের অভিযোগ করেন প্রিসাইডিং অফিসার। তার অভিযোগ, মুখে কালো কাপড় বেঁধে বুথের মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ জন ঢুকে মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে ব্যালটে ভোট দেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়েও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। কোচবিহারের ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটেরহাট ৪/৩৮ নম্বর বুথে বিজেপির এজেন্টকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। মালদহের মানিকচকে তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ তোলা হয়েছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। উত্তর দিনাজপুরের চাপড়ায় তৃণমূলের এক কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে চকমরিচায় দুই আইএসএফ কর্মীকে গুলি করার অভিযোগ তোলা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্ষমতাসীনরা।
এছাড়া কোচবিহারের সিতাইয়ে নির্বাচনের বুথে আগুন লাগানোর অভিযোগ ওঠে। এ সময় ব্যালট প্যাপারও পুড়িয়ে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ভারতে হবে লোকসভা নির্বাচন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে শক্ত অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছে। ফলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এসব সহিংসতায় নির্বাচনের আগের ৩০ দিনে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বেড়েছে নির্বাচনের দিন।