মুক্তিযোদ্ধের কণ্ঠ ডেস্কঃ শুরু থেকেই পিএসসি অধীনে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরোধী ছিল নার্সরা। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বাতিলের দাবিতে দিনের পর দিন আন্দোলন করেছে তারা। বয়কট করেছিল পিএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়াও। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় উপস্থিত থেকেছেন ৬৩ দশমিক ২৫ শতাংশ নার্স। সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার অনুষ্ঠিত সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে নিয়োগ পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৬৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। ১৮ হাজার ৬৩ জন আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ১১ হাজার ৪২৬ জন। অনুপস্থিত ছিলেন ৬ হাজার ৬৩৬ জন। ১০০ নম্বরের এমসিকিউ টাইপ পরীক্ষা শুক্রবার সকাল ১০ টায় শুরু হয়ে ১১ টায় শেষ হয়। গত ২৮ মার্চ ৩ হাজার ৬১৬ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় পিএসসি। এরপর থেকে আন্দোলনে নামে বেকার নার্সদের দুইটি সংগঠন। বাংলাদেশ ডিপ্লোমা বেকার নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ বেসিক গ্রাজুয়েট নার্সেস সোসাইটির ব্যানারে অনেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। পরীক্ষার দিনেও একটি অংশ পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে নার্সিং ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থান নেয়। বাংলাদেশ বেসিক গ্রাজুয়েট নার্সেস সোসাইটির সভাপতি রাজীব জানান, তারা পরীক্ষা বয়কট করে অন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সকাল থেকে বেলা ৩ টা পর্যন্ত নার্সিং ইনিস্টিউটের সামনে অবস্থান করেন। পূর্বের ন্যায় ব্যাচ, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নার্স নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। শনিবার সকাল ১১ টায় তারা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করবেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা সম্পন্নের জন্য পিএসসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এটা নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ নেই। অহেতুক উস্কানির মুখে চেষ্টা করা হচ্ছিল যাতে আজ পরীক্ষা না হয়। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয় হয়ে গেছে। এর দ্বারা কার লাভ হলো? পরীক্ষা দেওয়া ছাড়া তো চাকরি হবে না। তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এতে তারা নিজেদের ক্ষতি করেছে। পিএসসির পরীক্ষা ছাড়া দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা দেওয়ার নিয়ম নেই। আগে যারা কিছু সংখ্যক নিয়োগ পেয়েছিল, তারা এখন অনিশ্চিয়তায় রয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষকে চাকরি দিতে চাইছি, তাদের রুটি রুজির ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি। আর তারা রাজনৈতিক ফয়দা লুটতে চাচ্ছেন। তারা কতজন ডাক্তার-নার্স নিয়োগ দিয়েছেন। তারাই তো সংকট তৈরি করে গেছেন।’ তিনি বলেন, যারা এই উস্কানি দিয়েছেন, এটা অনাকাঙ্খিত। এটা আশ করা যায় না। নার্সদের প্রতি সরকার সহানুভূতিশীল বলেই ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই নিয়োগের পর পিএসসিকে ১০ হাজার নার্স নিয়োগের অনুরোধ জানাবেন। শুধু তাই নয়, নার্স সংকট সমাধানের জন্য ১০ হাজারের পরেও আরো নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি জানান, নার্সদের প্রতি সরকার সহানুভূতিশীল। ১০০০ নম্বরের পরীক্ষায় পরিবর্তে নার্সদের নিয়োগ পরীক্ষা শিথিল করে দেওয়া হয়েছে। আজ ১০০ নম্বরের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মোখিক পরীক্ষার নেওয়া হবে। এরপর তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। দেশে বর্তমানে সাড়ে ২১ হাজার বেকার নার্স রয়েছে। আন্দোলনে যারা অংশ নিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আন্দোলনকারী জানান, তিনি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। শুধু তিনি নন, অনেকেই অংশ নিয়েছেন। কারণ তারা চাকরি চান। এই আন্দোলকারীর দাবি, যারা আন্দোলনের নামে কিছু সংখ্যক নার্সদের পরীক্ষা থেকে বিরত রেখেছেন, তারা বিএনপি-জামায়াতের হয়ে কাজ করছে। আওয়ামীপন্থী কেউ আন্দোলনের সামনে নেই। এদিকে, বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নার্সরা। তারা বলছেন, তারা কোনো দলের ব্যানারে আন্দোলন করছেন না। তারা বেকার নার্সদের চাকরির জন্য যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছেন।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/ ৪-০৬-২০১৬ইং/ মোঃ হাছিবুর রহামন