আগামী ১২ জুলাই ঢাকার সমাবেশ থেকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই আন্দোলন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হবে এমনটা জানিয়ে তা যেন সফলভাবে করা যায় সেজন্য নেতাকর্মীদের দোয়া চেয়েছেন তিনি।
আজ সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার শারীরিক সুস্থতা কামনায় দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি সবার কাছে এ দোয়া চান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পাশাপাশি আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলন করছে তারা। নিজ নিজ জায়গা থেকে গণতন্ত্রের জন্য যে যাত্রা, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যে আন্দোলন কর্মসূচি তা ঘোষণা করা হবে ১২ জুলাই। সবাই আল্লাহ রব্বুল আলামীনের কাছে দোয়া করবেন যাতে এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সফল করতে পারি এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যদিয়ে যেন দেশের মানুষকে মুক্ত করতে পারি।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কেন অসুস্থ প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ম্যাডাম কেন অসুস্থ? এই যে নির্যাতন নিপিড়ন। ম্যাডাম নিজে আমাকে বলেছেন, যখন পুরানো সেন্ট্রাল কারাগারে তাকে রাখা হয়েছিল, আমরা পরে কারাগারে গিয়ে সেখানকার লোকজনের কাছ থেকে শুনেছি, যে কক্ষে রাখা হয়েছিল, পুরানো ঘর, দেয়াল দিয়ে পানি পড়ে, ইঁদুর দৌড়াচ্ছে যেটা বাসের উপযোগী ছিল না। সেখানে এই মহান নেত্রীকে রাখা হয়েছিল। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। সে সময় চিকিৎসকরা বলেছেন, তার জরুরি চিকিৎসা দরকার। তারা চিকিৎসা করেননি। তিনি ওই সময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই সময় ডাক্তাররা একাধিকবার গণমাধ্যমে বলেছেন- খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা জরুরি। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। পরে করোনা শুরু হয়ে গেলে পিজিতে আনল, সেখান থেকে বাসায় পাঠিয়ে দেয় সরকার।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার কথায় কথায় বলেন, খালেদা জিয়াকে দয়া দেখিয়ে বাসায় রেখেছি। আমরা দয়া চাইনি, জাস্টিস চেয়েছি। আমরা ন্যায় বিচার চেয়েছি, প্রাপ্যটা চেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারো দয়া চাননি। তাকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা বারবার তাকে বিদেশ নিয়ে চিকিৎসার কথা বলছেন। কিন্তু সরকার তাকে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ দেশে আমরা কোনো রাজা-রানির রাজত্বে বাস করি না। আমরা একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। সেই গণতন্ত্রই আজ দেশে অনুপস্থিত।’
এ অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।