যৌতুকের জন্য স্ত্রী রোমা আক্তারকে (২২) হত্যা মামলায় কারারক্ষী স্বামী খাইরুল ইসলামকে (২৮) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খাইরুল ইসলাম টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার বাইচাইল গ্রামের আ. মজিদের ছেলে। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
নিহত রোমা আক্তার কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলা মানিকখালী গ্রামের দুবাই প্রবাসী আ. মান্নানের মেয়ে।
কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর সরকারি কৌঁসুলি (স্পেশাল পিপি) অ্যাডভোকেট এমএ আফজল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গেছে, ঘটনার দেড় বৎসর পূর্বে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে কর্মরত কারারক্ষী খাইরুল ইসলামের (২৮) কাছে রোমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্যও বিভিন্ন সময় খাইরুল রোমাকে অত্যাচার, নির্যাতন করতেন। বিয়ের ৬ মাস পরে খাইরুলকে শ্বশুরবাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়। তাতেও খাইরুল সন্তুষ্ট ছিলেন না।
পুনরায় মোটরসাইকেল ক্রয় করার কথা বলে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। তাতে স্ত্রী রোমা আক্তার অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর থেকে রোমার ওপর অত্যাচার নির্যাতন অব্যাহত রাখেন স্বামী খাইরুল।
২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর রাত ২টার দিকে রোমাকে নির্যাতন করেন স্বামী খাইরুল। একপর্যায়ে বিষ জাতীয় কোনো কিছু খাওয়ালে রোমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হলে ২৬ ডিসেম্বর কর্তব্যরত ডাক্তার রোমাকে ছাড়পত্র দেন। পরে ২৯ ডিসেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে রোমা আক্তারের অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রোমা আক্তারের মৃত্যু হয়।
৩১ ডিসেম্বর ২০২০ নিহত রোমা আক্তারের মা বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার মামলাটি দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩১ জুলাই কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন আদালতে আসামি খাইরুল ইসলামের নামে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।