muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

রাজনীতি

কাদেরের পর ফখরুলের সঙ্গে বৃটিশ হাইকমিশনারের বৈঠক

কাদেরের পর ফখরুলের সঙ্গে বৃটিশ হাইকমিশনারের বৈঠক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার মিসেস সারাহ কুকের বৈঠক হয়েছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন কীভাবে হবে সেই প্রশ্নে বৈঠক করেন বৃটিশ হাইকমিশনার।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে সেতুমন্ত্রী কাদেরের সঙ্গে ওই বৈঠক হয়। অপরদিকে বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ফখরুলের সঙ্গে বৈঠক চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা।

এ সময় কুকের সঙ্গে ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সেলর টিমোথি ডকেট। ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন দলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।

এর আগে সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকের পর ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি কুকের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন ব্রিটেনে কীভাবে নির্বাচন হয়, সেখানে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন কি না, তাদের সংসদ ভেঙে দেয়া হয় কি না, তত্ত্বাবধায়ক নামে কোনো সরকারের আবির্ভাব হয় কি না।

সেতুমন্ত্রী কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্রিটিশ হাই কমিশনার সাহেবকে আমি জিজ্ঞেস করেছি, আপনাদের দেশে নির্বাচনটা কীভাবে হয়? সেখানে কি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে, হাউজ অব কমন্স কি ডিজলভ (ভেঙে দেওয়া) হয়? কেয়ারটেকার নামে কোনো সরকার কি নির্বাচনের সময় আবির্ভূত হয়?’

আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে পশ্চিমা বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থার নানামুখী তৎপরতার মধ্যে এই বৈঠক হয়। পশ্চিমারা বাংলাদেশে একটি ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ আয়োজনে জোর দিচ্ছে। তা না হলে দায়ী ও তার স্বজনদেরকে ভিসা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাজ্যের দূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে বৈঠকের কথা তুলে ধরে বলেন, সবার আলোচনার বিষয়বস্তু একই।

‘আগামী নির্বাচনটা কীভাবে হবে, সরকারি দল হিসাবে আমাদের ভূমিকা কী হবে, বিরোধী দলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কেমন হবে, নির্বাচনটা অবাধ, সুষ্ঠু কীভাবে হবে।’

সেতু ভবনে কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কিছু বলেননি সারাহ কুক। ফখরুলের সঙ্গে বৈঠকের পরও বক্তব্য আসে বিএনপির তরফ থেকেই।

আমীর খসরু সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ, সরকার গঠন হবে… এই কনসার্ন ব্রিটিশ সরকারের সব সময় ছিল। আমরা ওয়েস্ট মিনস্টার (ব্রিটেনের পার্লামেন্টারি সরকার ব্যবস্থা) ফলো করি। এই বিষয়গুলোই আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’

ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে আমীর খসরু বলেন, নতুন করে আজকে বলার কিছু নাই। আমরা একটা কথা বারবার বলছি যে, গণতন্ত্রকামী দেশ যেগুলো আছে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা মানবাধিকারে-আইনের শাসনে, জীবনের নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে… সবারই কনসার্ন একটা জায়গায়।

‘পরিবর্তনের একমাত্র উপায় হচ্ছে একটা নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচন। সেটা বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা, তাদেরও (পশ্চিমা শক্তি) একই প্রত্যাশা।’ বিএনপি নেতা প্রশাসনে রদবদল, বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে সহিংসতাসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন সাংবাদিকদের কাছে।

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান আমীর খসরু।

বিদেশিরা নির্দলীয় সরকার নিয়ে কোনো কথা বলছে না বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য তুলে ধরা হলে আমীর খসরু বলেন, “নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া হবে না, এটা কে না বোঝে বাংলাদেশে?

এদিকে, বাংলাদেশে কেমন নির্বাচন চান, সেই বক্তব্যে ব্রিটিশ হাই কমিশনার ‘পার্টিসিপেটরি’ বা অংশগ্রহণমূলক শব্দটা যোগ করেছেন বলে জানান ওয়ায়দুল কাদের।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি ও সমমনাদের সরকারপতনের ‘এক দফা’ আন্দোলন ঘোষণার কারণেই আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

একই দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বিএনপি ও সমমনারা বর্জন করে। ২০১৮ সালে তারা ভোটে এলেও সেই নির্বাচনে ‘আগের রাতে ভোট’ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তোলে পুরনো দাবিতে ফিরে গেছে এবার।

‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ নিয়ে বিদেশিদের বক্তব্যেও বিরক্তি প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাদের বলা তো তারা বলবেই। নির্বাচনে আসাটা একটি দলের অধিকার। আমি তো কাউকে জোর করে নির্বাচনে নিয়ে আসতে পারব না। যে অংশ নেবে, নেবে। তারা যে শর্ত জুড়ে দিচ্ছে সেটা সংবিধানের বাইরে।

‘আমার স্পষ্ট কথা, আমার দফা একটা। সংবিধানসম্মতভাবে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে।’

Tags: