বিনোদন ডেস্কঃ ঢাকাই ছবির নায়িকা মাহিয়া মাহি ও তাঁর স্বামী দাবিদার শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে শাওনের পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। সমঝোতা শর্ত অনুযায়ী, মাহি শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে করা মামলাটি প্রত্যাহার করে নেবেন। অন্যদিকে শাহরিয়ার জেল থেকে বের হয়ে মাহির বিরুদ্ধে কোনো মামলা করতে পারবেন না এবং মাহির ক্ষতি হয়, এমন কোনো আচরণ করতে পারবেন না বলে সমঝোতায় উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ রোববার বেলা তিনটায় মাহির উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরের বাসভবনে উভয় পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে ৩০০ টাকার দলিলে এই সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। সমঝোতা দলিলে স্বাক্ষর করেন মাহির বাবা আবু বকর ও শাহরিয়ারের বাবা নজরুল ইসলাম। সাক্ষী ছিলেন শাহরিয়ারের বড় চাচা আবুল হাশেম ও ছোট চাচা মাহমুদুল হাসান।
এত দিন মুখ না খুললেও সমঝোতা স্বাক্ষরের পর আজ রোববার কথা বলেন নায়িকা মাহিয়া মাহি। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে অনেকেই অনেকভাবে নেতিবাচক খবর ছড়িয়েছে। তিনি সব সময় চুপ থেকেছেন। কিন্তু এবার তাঁর বিয়ের এক দিনের মাথায় এমন খবর ছড়ানোয় বাধ্য হয়ে তিনি মামলা করেছেন। মাহি বলেন, ‘আমাকে জড়িয়ে যখন ছবিগুলো প্রকাশিত হয়েছে, তখন আমি নিজের কথা ভাবিনি, শুধুই আমার শ্বশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের কথা ভেবেছি। মনে হয়েছে, আমাকে জড়িয়ে এসব মিথ্যা খবরে তাঁরা সামাজিকভাবে হেয় হয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের দিকে তাকিয়ে আমার সততাকে প্রমাণ করার জন্যই মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।’
তবে মাহি মনে করেন, পুরো ঘটনার শুধু শাহরিয়ার একা জড়িত নন। মাহি বলেন, ‘শাওন আমার ছোটবেলার বন্ধু। তাঁর দ্বারা আমার এত বড় ক্ষতি সম্ভব নয়। সে কারও ইন্ধনে এমন কাজ করেছে। বিষয়টি নিয়ে তৃতীয় কোনো পক্ষ গভীর যড়যন্ত্রে লিপ্ত। শাওন যেকোনোভাবে এখানে ফেঁসে গেছে। বিষয়টি বোঝার পর আমি সমঝোতা করতে রাজি হয়েছি।’
সমঝোতা স্বাক্ষরের পর শাহরিয়ারের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা আর ভুল করতে চাই না। মাহির নতুন বিয়ে হয়েছে। তার জন্য আমাদের পরিবার থেকে সব সময়ই দোয়া থাকবে।’ শাহরিয়ারের ছোট চাচা মাহমুদুল বলেন, ‘আমাদের দুই পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক বহুদিনের। মাহিকে জড়িয়ে শাওন এ ধরনের ছবি প্রকাশ করবে আমরা আগে জানতে পারলে কখনোই তা পারত না।’
মাহমুদুল মনে করেন, ‘মাহিরও মিডিয়াতে শত্রু আছে। শাওনের একার পক্ষে হয়তো এটা করা সম্ভব নয়। এর পেছনে তৃতীয় কোনো পক্ষের হাত বা শাওনের বন্ধুদের প্ররোচনা থাকতে পারে।’ তিনি বলেন, মাহি তাঁর মামলা প্রত্যাহার করার সঙ্গে সঙ্গে কাবিননামা জমা দেওয়ার বিষয়টিও মূল্যহীন হয়ে যাবে।
সমঝোতা দলিল নিয়ে এখন কী করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ারের এই চাচা বলেন, ‘উকিলের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে ঠিকঠাক করব। হয়তো আগামীকাল আদালতে সমঝোতা দলিলটি জমা দেওয়া হবে।’
গত ২৫ মে মাহির বিয়ে হয় সিলেট নিবাসী কম্পিউটার প্রকৌশলী পারভেজ মাহমুদের সঙ্গে। এর এক দিন পর ২৭ মে বন্ধু শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে তাঁর কিছু ছবি কয়েকটি অনলাইন নিউজপোর্টাল এবং ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেদিনই রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় মাহিয়া মাহি তথ্যপ্রযুক্তি আইনে শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে পুলিশ শাহরিয়ারকে গ্রেপ্তার করে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়।
৩১ মে রিমান্ড শেষে শাহরিয়ার ইসলামকে আদালতে আনা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। সেদিন শাহরিয়ারের আইনজীবী বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, গত বছরের ১৫ মে শাহরিয়ার ও মাহির বিয়ে হয়। আদালতে বিয়ের কাবিননামাসহ প্রয়োজনীয় সব কাগজ জমা দেওয়া হয়েছে।